ইভটিজিংরোধ করে নারীদের সমুদ্র স্নানকে আনন্দময় করতেই ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ জোনে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন বিচ কর্মী ও লাইফ গার্ড সদস্যরা।
সম্প্রতি কয়েকটি নারী উত্যক্তের ঘটনার পর এ উদ্যোগ নেওয়া হলো।
সরেজমিন শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় গিয়ে দেখা যায়, সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে নেমে ডান পাশে হোটেল সিগাল বরাবর করা সুরক্ষা জোনের দুই দিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দু’টি প্ল্যাকার্ড ঝোলানো হয়েছে। যার একপ্রান্তে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা হয়েছে, ‘মহিলাদের সাঁতারের স্থান শুরু। ওমেন্স সুইমিং জোন স্টার্ট। ’ অপরপ্রান্তে লেখা হয়েছে, ‘মহিলাদের সাঁতারের স্থান শেষ। ওমেন্স সুইমিং জোন এন্ড। ’ ওই প্ল্যাকার্ডে জেলা প্রশাসনের একটি হেল্পলাইন নম্বরও (০১৭৩৩-৩৭৩১২৭) যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সমুদ্র স্নানে যাওয়া নারীরা এ হেল্প লাইন নম্বরে যোগাযোগ করে তাদের সমস্যা ও অভিযোগের কথা জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম থেকে ভ্রমণে আসা আফরোজা লিলি বলেন, আমরা একটি নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছি। আমাদের সঙ্গে কোনো পুরুষ নেই। এর আগেও এসেছিলাম তবে তখন পানিতে নামিনি। কিন্তু এবার আমরা এই জোনে মনের খুশিতে লাফাবো। সাঁতার কাটবো। জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে ধন্যবাদ জন্য তিনি।
ট্যুরিজম ও প্রটোকল শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন সাইফুল আশরাফ জয়ের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের পরামর্শ ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে তৈরি করা এ সুইমিং জোনের কার্যক্রম বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে। এতে বাবা-ভাই, স্বামী বা পরিবারের পুরুষ সদস্যদের ছাড়া আসা নারীরা স্বস্তিতে ও নির্বিঘ্নে সমুদ্র স্নান বা সাঁতার কাটার সুযোগ পাচ্ছেন। কোনো নারী হয়রানি বা শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হলে বিচ কর্মীরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়াও সমুদ্র স্নানে যাওয়া কোনো নারী বিপদাপন্ন হলে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যাবেন লাইফ গার্ড সদস্যরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন সাইফুল আশরাফ জয় বলেন, ‘পুরো সৈকত নারীদের জন্য উন্মুক্ত। তবে চাইলে নারীরা সংরক্ষিত এ ১০০ মিটার এলাকায় গোসল করতে পারবেন, সাঁতারও কাটতে পারবেন। নারীদের সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে কাজ করছেন নিচ কর্মী ও লাইফ গার্ড সদস্যরা। ’
সম্প্রতি কয়েকটি ইভটিজিংয়ের ঘটনায় শাস্তি হিসেবে ৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রায়ই এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের বিশেষ নিরাপত্তা দিতে এ সুরক্ষা জোন তৈরি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘নারীদের জন্য সংরক্ষিত জোন করায় সমুদ্র স্নানে যাওয়া পর্যটক নারীরা স্বস্তি পাবেন। তাদের সামগ্রিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সহজ হবে। এছাড়াও কক্সবাজারের পর্যটন বিকাশের ক্ষেত্রে এ উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, বিশ্ব দরবারে কক্সবাজারকে তুলে ধরতে জেলা প্রশাসনের অনেকগুলো উদ্যোগ রয়েছে। এরমধ্যে একটি ছিলো নারীদের জন্য আলাদা সুইমিং জোন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৮
জেডএস