রোববার (০৭ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে কেন্দ্রীয় পানি কমিটি ও বেতনা বাঁচাও কমিটির নেতারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেতনা বাঁচাও কমিটির নেতা ইয়ারব হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের অন্যতম বেতনা নদী ঝিনাইদহের মহেশপুর, যশোরের চৌগাছা, শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলা এবং সাতক্ষীরার তালা, কলারোয়া, সদর এবং আশাশুনি উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বেতনা নদীর অববাহিকায় প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমি এবং ১০ লাখ মানুষের বসবাস। পলি জমে নদীর বক্ষ ভরাট হওয়ায় বিগত দুই দশক ধরে প্রতিবছর বর্ষাকালে বেতনা অববাহিকায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে জনপদ প্লাবিত হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ধান ও মাছ চাষসহ সকল ধরনের উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে বাস্তুভিটা ত্যাগকারীর সংখ্যা। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে নিকট ভবিষ্যতে এ এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।
তারা বলেন, এ সমস্যা দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার নদী খনন করা হলেও আশাব্যঞ্জক কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি বরং প্রতিবছর অপমৃত্যুর হার বৃদ্ধি পেয়ে বেতনা নদী এখন মৃত্যুর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী শুধু খনন করে নদীরক্ষা করা সম্ভব নয়। এ জন্য খননের পাশাপাশি জোয়ারাধার (টিআরএম) বাস্তবায়ন করতে হবে।
নেতারা বলেন, ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভৈরবের সঙ্গে মাথাভাঙ্গার সংযোগ দিয়ে এবং বেতনার উপরের অংশের খনন করে ভৈরবের সঙ্গে পুনঃসংযোগ দিয়ে বেতনা নদীতে উজান প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। এলাকার নদীগুলোর মধ্যে পরস্পরের সংযোগ এবং এর সঙ্গে উজান প্রবাহ যুক্ত হলে এলাকার সকল নদীই তার পূর্বের প্রাণ-প্রবাহ অনেকটা ফিরে পাবে। নিরাপদ হবে এলাকার উৎপাদন ব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশ-প্রতিবেশগত ভারসাম্য।
এসময় বেতনা নদী রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এর অববাহিকার ১০ লাখ মানুষকে চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, জিল্লুর রহমানসহ বেতনা অববাহিকার শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
টিএ