ভারত বিভাগের পর ১৯৫০ সালে ঢাকায় নির্মিত হয় মাহবুব আলী ইনস্টিটিউট। একাত্তরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘকাল যাবত ঢাকায় স্বতন্ত্র কোনো নাট্যমঞ্চ নির্মিত না হলেও বেশ কয়েকটি সাধারণ মঞ্চ বিশেষভাবে নাট্যাভিনয়ের জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে।
পরে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ হানিফের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে মহানগর নাট্যমঞ্চ। এ স্থানটি নাট্যকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ঘটেছে বিপরীত।
যে পরিকল্পনা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল রাজধানীর এ নাট্যমঞ্চটি, তা থেকে বহু দূরে সরে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। বছরের অধিকাংশ সময়ই এটি থাকে তালাবদ্ধ। যেটুকু ব্যবহার হয়, সেটুকুও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনসমাবেশ ও কর্পোরেট সংস্থাগুলোর নানান আয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে বলে জানান এর নিরাপত্তা কর্মীরা।
নাট্যাভিনয়ের জন্য নাট্যমঞ্চটি তৈরি হলেও তাতে নাটকের মঞ্চায়ন হয় না দীর্ঘদিন। এজন্য অবশ্য বিভিন্ন অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন বিভিন্ন নাট্যকর্মী।
এ প্রসঙ্গে লোকজ নাট্যদলের নাট্যকর্মী তানভীর আহমেদ বলেন, মহানগর নাট্যমঞ্চ নাট্যকর্মীদের কাছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্থান। সরকারি উদ্যোগে দেশে এটিই প্রথম আধুনিক নাট্যমঞ্চ হওয়ায় এখানে আমাদের আলাদা একটা চাহিদাও থাকে। কিন্তু এটি এখন গুলিস্তান এলাকার সর্বসাধারণের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে যেন!৬০০ আসনবিশিষ্ট ‘ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ’ নামে খ্যাতি থাকলেও এখন কোনো জৌলুস নেই তার। নাট্য আঙিনা হিসেবে পরিচিতির জন্য নেই আলাদা কোনো ব্যবস্থাও। গুলিস্তানের যাবতীয় হকারদের রাত্রিযাপন ও মাদকসেবীদের আড্ডার স্থান হিসেবেও এটি বেশ পরিচিত অনেকের কাছে।
বর্তমানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানালেন নিরাপত্তা কর্মী ফজলুল হক। তিনি বলেন, কিছুদিন আগের তুলনায় বর্তমানে এখানকার পরিবেশ বেশ ভালো।
এ মঞ্চে শেষ কবে নাটক হয়েছিলো জানতে চাইলে বলেন, ‘আছি তো অনেকদিন থেকেই। তবে গত ৩/৪ বছরে এ মঞ্চে কোনো নাটক মঞ্চায়ন হয়নি। ’
তার মতে, বর্তমানে নাট্যমঞ্চের ভাড়া প্রতিদিন প্রায় ৫২ হাজার টাকা। এর ফলেই মঞ্চ নাটকগুলোর নাট্যকর্মীরা এখানে নাটক মঞ্চস্থ করতে আগ্রহী নন। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা আর সরকারি পৃষ্ঠপোষকাতা পেলে মঞ্চটি আবারো মঞ্চনাটকে সরগরম হবে বলে মনে করেন নাট্যকর্মীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ