ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভোটের মাঠে ‘একটি দল’ ছড়িয়েছে ১৫০-২০০ কোটি টাকা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
ভোটের মাঠে ‘একটি দল’ ছড়িয়েছে ১৫০-২০০ কোটি টাকা  টাকাসহ আটক ব্যবসায়ীরা

ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অসৎ উদ্দেশ্যে দেশে প্রায় দেড় থেকে দুইশ কোটি টাকা ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলের সিটি সেন্টারের একটি অফিসে অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি টাকা ও ১০ কোটি টাকার চেকসহ তিনজনকে আটক করে র‌্যাব

আটকরা হলেন- কথিত আমদানি-রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড করপোরেশনের এমডি আলী হায়দার, গুলশানের আমেনা এন্টারপ্রাইজের জিএম (অ্যাডমিন) জয়নাল আবেদিন ও অফিস সহকারী আলমগীর হোসেন।

অভিযান শেষে সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বেনজীর আহমেদ।

টাকাগুলো 'একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভোট কেনার জন্য' দুবাই থেকে বাংলাদেশের পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু এই অফিসটি থেকে দিনে কোনোদিন ১১ কোটি, কোনোদিন ২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। টাকাগুলো অধিকাংশ দুবাই থেকে এসেছে হুন্ডি ও ব্যাংকের মাধ্যমে।

‘গত দুই মাসে আমরা ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছি। তবে এই অফিসের লোকজন টাকার রেকর্ড বেশিদিন রাখে না। তাই আমরা সব পাইনি। জব্দ যন্ত্রাংশগুলোর ফরেনসিক টেস্ট করে আমরা বিস্তারিত লেনদেনের বিষয়ে বলতে পারবো। ’

র‌্যাব ডিজি বলেন, সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় যেখানে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে ইউনাইটেড করপোরেশন ও ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ নামের দু’টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গ্রেফতাররা নির্বাচন কেন্দ্র করে দু’মাস আগে অফিসটি ভাড়া নেয়। ইউনাইটেড করপোরেশনের কথিত মালিকের গত এক মাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭৩ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন এবং গত দুই মাসে এক কোটি টাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়েছেন।  

তিনি আরো বলেন, অফিসটিতে আমরা একটি আসনে সব ভোটারদের নাম, ফোন নম্বর ও ঠিকানা সম্বলিত একটি তালিকা পেয়েছি আমরা ধারণা করছি তাদের ভোট কেনার জন্য টাকাগুলো রাখা হয়েছে। যারা কালো টাকা দিয়ে ভোট কেনে তারা ক্ষমতায় এলে দেশের অর্থনীতির কি হবে সেটা সবার অনুমেয়।

প্রাথমিক তদন্তের পর আমরা ধারণা করছি, নির্বাচন প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং পেশীশক্তির মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে টাকাগুলো এখান থেকে পাঠানো হচ্ছে।

বেনজীর আহমেদ বলেন, এখানে আমরা একজন মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাগজপত্র দেখতে পেয়েছি যাকে সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। তিনি শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপি মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী নুরুদ্দিন অপু। তার এলাকায় টাকা যাওয়ার পর নির্বাচনী সহিংসতা হয়েছে। আমরা দেখেছি দেশের যেসব স্থানে এই টাকাগুলো গিয়েছে সেখানেই নির্বাচনী সহিংসতা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে একজন হাওয়া ভবনে কাজ করতো বলেও জানান তিনি।

জনসাধারণকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে যখনই এমন লেনদেনের তথ্য পাবেন আমাদের জানাবেন। কারণ ইতোমধ্যে দেড় থেকে ২শ কোটি টাকা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের আরেকটু সময় দিতে হবে। আটকদের জিজ্ঞাবাদের পর এ বিষয়ে আরও জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
পিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।