ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০১৮ সাল

৬ হাজার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭৭৯৬ জন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
৬ হাজার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭৭৯৬ জন যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন/ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: সড়ক-রেল-নৌপথ ও আকাশপথে গত বছর (২০১৮ সাল) ৬ হাজার ৪৮টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৭৯৬ জন। একই সঙ্গে এ দুর্ঘটনায় আরো ১৫ হাজার ৯৮০ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানানো হয় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যানে।  

দেশের জাতীয় আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রগুলোতে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৫৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ২২২ জন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। রেলপথে ৩৭০টি দুর্ঘটনায় ৩৯৪ জন নিহত এবং ২৪৮ জন আহত হয়। নৌপথে ১৫৯ দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত ও ২৩৪ জন আহত এবং ৩৩৭ জন নিখোঁজ হয়েছে। আকাশ পথে পাঁচটি দুর্ঘটনায় ৫৫ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়।

সব মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে ৬ হাজার ৪৮ দুর্ঘটনায় সাত হাজার ৭৯৬ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৯৮০ জন আহত হয়েছে। এতে ৮৮০ জন শিক্ষার্থী ২৩১ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৭৮৭ নারী, ৪৮৭ শিশু, ১০৬ শিক্ষক, ৩৪ সাংবাদিক, ৩৩ চিকিৎসক-প্রকৌশলী, ২ আইনজীবী এবং ১৯২ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী আক্রান্ত হয় বলেও জানানো হয় পরিসংখ্যানে।

উল্লেখিত সময়ে সংঘটিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৭ হাজার ৩৫০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এর মধ্যে ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ বাস, ২৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ কার মাইক্রোবাস, ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ অটোরিকশা, ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৩.৫ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৫.৮ শতাংশ নসিমন-করিমন ও হিউম্যান হলার সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

সংঘটিত দুর্ঘটনায় ৪২ দশমিক ৫৩ শতাংশ গাড়ি চাপা, ২৯ দশমিক বাহাত্তর শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ খাদে পড়া, দশমিক ৫৫ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং দশমিক ৮৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পরিসংখ্যানে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা দখলে থাকা, ওভারলোড এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশকিছু সুপারিশমালা তুলে ধরে সংগঠনটি। এর মধ্যে- ট্রাফিক আইন, মোটরযান আইন ও সড়ক ব্যবহার বিধি বিধান সম্পর্কে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীদের জন্য, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় জনসাধারণের জন্য ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা; টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্র সমূহে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক৬ প্রচারের ব্যবস্থা করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা; ফুটপাত দখলমুক্ত করা; রোড সাইন স্থাপন করা, জেব্রাক্রসিং অঙ্কন করা; গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা; যাত্রী পথচারীবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধি প্রণয়ন; গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন করা; জাতীয় মহাসড়কে স্বল্প ও দ্রুতগতির জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করা; সড়ক নিরাপত্তা তহবিল গঠন; সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা; লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কালে চালকের ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা এবং পর্যাপ্ত গণপরিবহন নামানো উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়।

আয়োজনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমানসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
এইচএমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।