প্রকৃতি যেন দিন দিন হারিয়ে ফেলছে তার নিজস্বতা। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্রমশ বদলে যাচ্ছে ঋতুচক্রের বৈশিষ্ট্য।
শীতের প্রকোপ না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে শীতবস্ত্রের ওপর। কাঙ্খিত বেচাকেনা না হওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা।
তারা বলছেন, পৌষে শীতের প্রভাব থাকলেও মাঘে তেমনটা লক্ষ করা যাচ্ছে না। শীতের তীব্রতা না থাকার কারণে শীতবস্ত্রের চাহিদাও বাড়েনি। এর ফলে শীতবস্ত্র বিক্রিতে বিরাজ করছে মন্দাবস্থা।
শনিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে মহানগরীর রেলওয়ে মার্কেট, নিক্সন মার্কেট, জব্বার মার্কেট, ফেরিঘাট মোড়ের শীত পোশাকের দোকানসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে শীতের পোশাকের দোকানে ক্রেতার ভিড় দেখা যায়নি খুব একটা। বেশিরভাগ দোকানেই শীতের কাপড়ের স্তূপ। এবার শীত না থাকার কারণে পাইকারি অর্ডার কম হয়েছে। যার ফলে নতুন কোনো ডিজাইনের শীতবস্ত্র আনছেন না দোকানদাররা।
শীতই তো নেই, গরম কাপড় দিয়ে কী হবে- এমন কথাও শোনা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে।
বিক্রেতারা বলছেন, মধ্য মাঘেও শীত নেই। দিনেরবেলায় গরম কাপড় ছাড়াই দিব্যি কাজকর্মে সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাতে গায়ে গরম কাপড় চাপাচ্ছেন, তবে সেসবও তেমন ভারী কিছু নয়। চাদর-মাফলার-টুপিতে কান-গলা-মাথা পেঁচিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার মতো হাড়কাঁপানো শীত এবার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। যার কারণে শীত পোশাক বিক্রি নেই বললেই চলে।
ফেরিঘাট মোড়ে শীত পোশাক বিক্রেতা মহিদুল ইসলাম বলেন, এবার শীত কম তাই বিক্রি কম হয়েছে। যে পোশাক শীত মৌসুমে এনেছিলাম তার অর্ধেক বিক্রি করতে পেরেছি বাকি অর্ধেকের মতো ধরা রয়ে গেছে। এখানে প্রায় ৩০/৩৫টি দোকান আছে। সবার একই অবস্থা।
হতাশার সুরে একই মোড়ের পোশাক বিক্রেতা আব্দুল কাসেম বলেন, এবারে যে পোশাক এনেছিলাম তার তিন ভাগের এক ভাগও বিক্রি হয়নি। মাল বিক্রি করতে না পেরে চিন্তায় আছি। ভাবছি সাতক্ষীরার নলতাতে একটা মেলা আছে সেখানে নিয়ে যাবো।
নিক্সন মার্কেট মিলন এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী রিফাত বলেন, শীত পোশাকের চেয়ে কম্বলের বেচাকেনা মোটামুটি ভালো, তবে গত বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা কম।
খুলনা বিপনি বিতানের জাহিদ এন্টারপ্রাইজের এক কর্মচারী বলেন, বিপুল পরিমাণ শীত পোশাকের সমাহার ছিল। কিন্তু শীত কম থাকার কারণে তা বিক্রি হয়নি।
এসব দোকানিরা জানান, এবার শীত কম থাকায় তেমন বিক্রি হয়নি। শীত যদি একটু বাড়েও সময় তো শেষ। জানুয়ারি শেষ হলে শীত বিদায় নেবে। শীতের পোশাক বিক্রি না হওয়ায় তারা চরম লোকসানে পড়বেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯
এমআরএম/আরআর