মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ মাছ ধরা উৎসবে দেশীয় উপকরণ পলো এবং বিভিন্ন জাল নিয়ে অংশ নেন পাঁচ গ্রামের ৩ শতাধিক মানুষ।
মুরুব্বীদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার পানিউমদা, কুর্শা, বড়কান্দি, বড়গাঁও, বুড়িনাও (পাঁচগ্রাম)’র দিনব্যাপী এ মাছ ধরার উৎসবের আয়োজন করেন।
সকাল থেকেই পলো, জাল, দঁড়িসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে নদীর পাড়ে এসে জড়ো হতে থাকেন। প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পলো দিয়ে পানিতে একের পর এক ঝাঁপ দেওয়া আর হৈ হুল্লোর করে সামনের দিকে ছন্দের তালে তালে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা। এ যেন হারিয়ে যাওয়া বাংলার সৌন্দর্যময় দৃশ্য আর ঐতিহ্যের জয়গান।
শিকারীদের অনেকেই বোয়াল, গজার, শোলসহ বিভিন্ন দেশি প্রজাতির মাছ ধরেন। কেউ কেউ একাধিক ধরলেও কেউ ফিরেন শূন্য হাতে। একদিনে কয়েক লাখ টাকার মাছ শিকার হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। একজন মাছ ধরতে পারলে আওয়াজ তুলে আনন্দে শরীক হন সবাই। পলো ছাড়াও ফার জাল, ছিটকি জাল, ঝাঁকি জাল, পেলুন ইত্যাদি দিয়ে মাছ শিকার করেন অনেকে।
বড়কান্দি গ্রামের আলত মিয়া পলো দিয়ে দু’টি বড় বোয়াল মাছ ধরেছেন। মাছ দু’টির দাম হবে দুই হাজার টাকা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পলো দিয়ে মাছ শিকারের আনন্দই আলাদা। তিনি হাসি মুখে মাছ দু’টি নিয়ে বাড়ি ফিরেন।
বুড়িনাও গ্রামের সুমন মিয়াও ছোট বড় কয়েকটি মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তার এক হাতে ছিল পলো আর এক হাতে শিকার করা মাছ।
হবিগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাদা খসরু বাংলানিউজকে বলেন, হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে এবার ভালোই মাছ উৎপাদন হয়েছে। পলোসহ দেশিয় উপকরণ দিয়ে মাছ শিকার করলে যেমন খরচ কম, তেমনি মাছের বংশ বিনাশ হয় না।
তিনি আরও বলেন. বহু পুরনোকাল থেকে হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে মাছ শিকারের জন্য পলোর ব্যবহার হয়ে আসছে। বাঁশের তৈরি পলো দিয়ে মাছ শিকারসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন কৃষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
জিপি