ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লতিফ সিদ্দিকীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
লতিফ সিদ্দিকীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী

ঢাকা: বেআইনিভাবে পাটকলের (তৎকালীন বাংলাদেশ জুট করপোরেশন) জমি বিক্রি করে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) কমিশন বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

 

দরপত্র ছাড়াই পাটকলের প্রায় আড়াই একর জমি বিক্রির মাধ্যমে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর বগুড়ার আদমদীঘি থানায় লতিফ সিদ্দিকীসহ দু’জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করে দুদক।

মামলার অপর আসামি হলেন-জমির ক্রেতা বগুড়া শহরের কাটনারপাড়া এলাকার মৃত হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদ।

দুদক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর বগুড়ার আদমদিঘী থানায় লতিফ সিদ্দিকী ও জাহানারা রশীদ নামের এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম।  

তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরস্পর যোগসাজশে সরকারি আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। মামলার তদন্ত করেন বাদী আমিনুল ইসলাম নিজেই।

সূত্র আরও জানায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রানীনগর বাজারে বাংলাদেশ জুট করপোরেশনের (বর্তমানে বিলুপ্ত) পাট ক্রয় কেন্দ্র ‘সুরুজ মল আগরওয়ালা’র ২ একর ৩৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে।  ব্রিটিশ আমলে জমিটি সুরুজ মল আগরওয়ালা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হুকুম দখল করা হয়।  

আরও পড়ুন>>লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

যা ২০১০ সালের ১৩ মে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জমিটি তিন বছরের জন্য লিজ নেন বগুড়া শহরের কালিতলা এলাকার মৃত হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদ। এর জন্য বছরে লিজ মানি ধার্য ছিল এক লাখ ২০ হাজার টাকা। জাহানারা রশিদ প্রথম বছরের লিজ মানি পরিশোধ না করেই ওই জমি কেনার জন্য ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।

সরকারি জমি স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিতে বা বিক্রি করতে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের নিয়ম থাকলেও সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী তা করেননি বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়। তিনি তার পরিচিত জাহানারা রশিদের কাছে দরপত্র ছাড়াই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।  

লতিফ সিদ্দিকীর একক সিদ্ধান্তে ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৫ টাকা দামের জমিটি মাত্র ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৪ টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকা ১১ পয়সা আর্থিক ক্ষতি হয় বলে ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।  

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই জমিটি কম দামে বিক্রি করায় নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইসমাইল হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। পরে জাহানারা রশিদ সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করলে তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়। দুদক ২০১৪ সাল থেকে অনুসন্ধান শুরু করে ২০১৭ সালে এসে মামলাটি করে।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ব্যক্তিস্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। এতে সাবেক মন্ত্রী ও জাহানারা রশিদের পরস্পর যোগসাজশ ছিল। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমাণ হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯/আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা
আরএম/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।