বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে উপজেলার তেলিহারা গ্রামে হামলার ঘটনা দু’টির পর দুপুরে বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোখলেছুর মারা যান। তিনি সদর উপজেলার তেলিহারা পূর্বপাড়ার মৃত লাল মিয়ার ছেলে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ জানায়, সম্প্রতি সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য (ইউপি) এমদাদুল হক একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি পান। এই কালভার্ট নির্মাণের কথা বলে পাশের করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন তিনি। আর সেই বালু বিক্রি করছিলেন। এতে করে নদী তীরবর্তী ফসলি জমি ও বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়ে। ফলে গ্রামবাসী প্রায় সপ্তাহখানেক আগে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়।
পাশাপাশি ঘটনাটি তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানায়। ঘটনাটি জানার পর চেয়ারম্যান সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ইউপি সদস্য যেন উঠানো বালু অন্যত্র সরিয়ে নিতে না পারেন, সেজন্য গ্রামবাসীকে প্রতিবন্ধকতা তৈরির পরামর্শ দেন। চেয়ারম্যানের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রামবাসী রাস্তার মাঝে খুঁটি পুঁতে রাখে।
বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ইউপি সদস্য এমদাদুল হক ও তার সহযোগীরা বালু উত্তোলন পয়েন্টে যান। তখন রাস্তায় পুঁতে রাখা খুঁটি সরিয়ে উত্তোলনকৃত বালু নিতে শুরু করেন তিনি। এসময় গ্রামবাসী বালু নিতে তাদের বাধা দেয়।
এতে গ্রামবাসীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা হামলা চালান। হামলায় তেলিহারা গ্রামের শাহাদত, রহমান, শাবলু, পরান, আশরাফুল, খোকন ও নিখিলসহ ৭-৮জন আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শহরতলীর অদূরে অবস্থিত টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে ছেলে খোকন আহত হওয়ার খবর পেয়ে বাবা মোখলেছুর রহমান ভ্যান নিয়ে হাসপাতালের পথে রওনা হন। পথিমধ্যে ইউপি সদস্যের সহযোগীরা তাকে আটকে মারপিট শুরু করে। এতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে পুলিশ মোখলেছুরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
বিকেলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শেখেরকোলা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য (ইউপি) এমদাদুল হকের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯
এমবিএইচ/এইচএ/