ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার জাগরণের প্রতীক

আবুল কাশেম আহমেদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৫
শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার জাগরণের প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি

ঢাকা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দুই দিনের সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়েছে।

দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে উদারকরনের লক্ষ্যে যেসব দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তাতে শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয় সমস্ত দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।

বিশেষ করে সংযোগ চুক্তি (কানেকটিভিটি) বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক নয়া দিগন্তের সূচনা করবে।

বাংলাদেশের জল ও স্থল বন্দর ব্যবহার করে ভারত সরকার যে অর্থ প্রদান করবে তাতে বাংলাদেশ প্রচুর লাভবান হবে। এছাড়া রেললাইন ব্যবহার করে ভারত যে অর্থ প্রদান করবে তাতেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। বিশ্বের অনেক দেশই জল ও স্থল বন্দর অন্য দেশকে ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়। যেমন- বন্দর আব্বাস, সিঙ্গাপুর জল বন্দর এর জলন্ত দৃষ্টান্ত। ইউরোপের সকল দেশেরই অন্য দেশের স্থল বন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে এবং তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের মংলা এবং চট্রগ্রাম জল বন্দরকে প্রচুর সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। নতুন করে অত্যাধুনিক ট্রেন লাইন স্থাপন করতে হবে। যে সব স্থল বন্দর দিয়ে মালামাল যাওয়া আসা করবে সেই স্থল বন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক চলাচল সুবিধা ও পণ্য পরিবহন সহজীকরণের জন্য নদী গুলোকে ড্রেজিং করতে হবে। বিদেশে নদী সে দেশের সম্পদ কিন্তু আমাদের দেশে নদীগুলো অভিশাপ। এই সমস্যা থেকে অবশ্যই উত্তরণ ঘটাতে হবে। মংলা বন্দরের মালামাল পরিবহন সহজীকরনের লক্ষ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। চট্রগ্রাম বন্দর থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপন এবং রাস্তাগুলোকে যুগোপযোগী করে তৈরি করতে হবে। আখাউড়া স্থল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে যেন সেভেন সিস্টার্সের রাজ্যগুলোতে মালামাল বহনকারী পরিবহন সহজে চলাফেরা করতে পারে। এছাড়া ভোমড়া, বেনাপোল, সাত মসজিদ, হিলি, বিলোনিয়া ও তামাবিল সহ সকল স্থল বন্দরের অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। শুল্ক স্টেশনগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবকাঠামোসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যেন উভয় দেশই রাজস্ব আদায়ে লাভবান হতে পারে। এছাড়া আশুগঞ্জের জল বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে আখাউড়া পর্যন্ত কমপক্ষে চার লেন রাস্তা তৈরি করতে হবে। এই চুক্তির ফলে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বেড়ে যাবে এবং নেপাল ও ভুটানেও পণ্য রপ্তানি অনেক বেড়ে যাবে। সর্বোপরি বাংলাদেশই বেশি লাভবান হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে এই চুক্তিগুলো সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে চির জাগ্রত হয়ে থাকবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েই এই চুক্তিগুলো সম্পন্ন করেছেন। সারা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। “ নবযুগ দ্বারে করাঘাত করছে, দ্বার খুলে দাও। ”

৬৮ বৎসরের সমস্যার সমাধান হয়েছে ছিটমহল চুক্তির মাধ্যমে। এতে ছিটমহলবাসীর ভোগান্তির চির সমাপ্তি ঘটেছে। বিশ্বের সকল দেশ এই চুক্তিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যা বিশ্ব শান্তির মডেল। জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও মেধার পরিচয় বহন করে। মানুষের উন্নয়নের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ এই চুক্তি। শেখ হাসিনা চির জাগ্রত, চির ভাস্বর এবং বঙ্গবন্ধুর মতই মৃত্যুহীন, চির অমর।
 


লেখক পরিচয়: আবুল কাশেম আহমেদ,সভাপতি, স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদ (বাংলাদেশ)




বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।