ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন: রিজভী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪
দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন: রিজভী

ঢাকা: দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দায়ী করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দখল-ডাকাতির নির্বাচনে আপনি এককভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছেন, আপনি কেন পদত্যাগ করেননি? আপনারা কাছে চাকরিটাই বড় ছিল, দেশ-রাষ্ট্রের কথা কি মনে ছিল না? আমাদের দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য যারা দায়ী, তার মধ্যে অন্যতম নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।



এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অ্যাগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (অ্যাব)।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাংবিধানিক ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার জন্য যারা দায়ী, তাদের আইনের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি। আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।

স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে আঁতাত করা মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে বেইমানি করা জানিয়ে রিজভী বলেন, আমাদের দল এমন একটি রাজনৈতিক দল, এর সাথে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে আমাদের। একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা অতীতে আঁতাত করা যাদের রেকর্ড আছে তারা ক্ষমার কথা বলছেন। গণহত্যাকারীদের কিসের ক্ষমা? 

এখনো সব অফিস ও আদালতে শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী বলেন, গণহত্যাকারীদের ও গণহত্যায় জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ জড়িতদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। বর্তমানে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে যা জনগণের নজরে এসেছে।  

বস্তুনিষ্ঠু সংবাদ প্রকাশ না করায় মিডিয়া স্বৈরাচারের ডাণ্ডায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, গণমাধ্যমের মূল কাজ সত্য উদঘাটন করে নিষ্ঠাবস্তু খবর পরিবেশন করা। এটাই গণতন্ত্র। এর বাইরে গেলে সেটা গণমাধ্যম নয়, প্রচারমাধ্যম বা স্বৈরাচারের ডাণ্ডায় পরিণত হয়। প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশে স্থিতিশীল বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। রাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রকে বিকাশ করতে হলে একমাত্র উপাদান হচ্ছে স্বাধীন গণমাধ্যম, আবার সেই গণমাধ্যমকে অবশ্যই সত্য বস্তুনিষ্ঠু সংবাদ প্রকাশ করতে হবে।  

বিএনপির ওই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ১৯৯৭ সালের সব গণমাধ্যম বন্ধ করেছিল, শুধু চারটি পত্রিকা রেখে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করেছিল। এবার ভিন্নরূপে বাকশাল কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। খুব বেশি পত্রিকা বন্ধ না করলেও দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, আমার দেশ, দিনকাল বন্ধ করেছে। কিন্তু যেসব চালু ছিল সেখানে মালিকানা দিয়েছে আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠদের। তারা সারাক্ষণ আওয়ামী লীগের প্রচারমাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, চ্যানেল ২৪ এ প্রকাশিত মিথ্যা বানোয়াট সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সব সাংবাদিক বন্ধুদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশকে কেউ দখল করেনি বরং আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট যারা এতদিন লুটপাট করে কৃষিবিদদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর সাধারণ কৃষিবিদদের রোষানল থেকে তারা নিজেদের রক্ষা করতে আত্মগোপন করেছে। উপরন্ত যেখানে দুই বছর পর পর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের নির্বাচনের মাধ্যমে কেআইবি পরিচালনা করার কথা, সেখানে ১৮ বছর নির্বাচনবিহীন জোরপূর্বক তথাকথিত একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় পেশাজীবীদের প্রতিষ্ঠান তথা কৃষিবিদদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন জোরপূর্বক দখল করে রাখা হয়েছে।  

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম যারা বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন (খুনি শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী) ও কৃষিবিদ সমীর চন্দ (কৃষকলীগের সভাপতি) যারা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৮ বছর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।  

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এখানে উল্লেখ্য যে, কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র, সভাপতি, কৃষক লীগ এবং মশিউর রহমান হুমায়ুন, বিশেষ সহকারী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এর নেতৃত্বে অস্ত্রধারীদের সহায়তায় ১/১১ এরপর ২০০৮ সালে তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে অ্যাবের বর্তমান আহ্বায়ক কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়। অথচ চ্যানেল ২৪ এ প্রচারিত সংবাদে এই ধরনের কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটি সম্পূর্ণরূপে হলুদ সাংবাদিকতারই বহিঃপ্রকাশ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি দেখে প্রতীয়মান হয়, আওয়ামী লীগের গত ১৮ বছরের প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে যারা এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা অর্জন করেছেন তাদের চ্যানেলের মাধ্যমে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করে মিডিয়া ক্যু এর মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে। শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী দোসরদের যেকোনো ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র সাধারণ কৃষিবিদরা নস্যাৎ করে দিতে বদ্ধপরিকর এবং এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আদর্শের সব কৃষিবিদরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা এ ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যাবের নেতা কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, কৃষিবিদ ড. শফিকুল ইসলাম, কৃষিবিদ নুরুন্নবী ভূইয়া শ্যামল, কৃষিবিদ আনিসুর রহমান আনিস, কৃষিবিদ ড. আকিকুল ইসলাম আকিক, কৃষিবিদ ফেরদৌস হাওলাদার, কৃষিবিদ কেএম সানোয়ার আলম, কৃষিবিদ শাহাদাত হোসেন পারভেজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৪
ইএসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।