ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

‘পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চলছে, তবে আ.লীগের ফেরার সুযোগ নেই’

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৩১, আগস্ট ১৩, ২০২৫
‘পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চলছে, তবে আ.লীগের ফেরার সুযোগ নেই’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনকেন্দ্রিক পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চলছে জানিয়ে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একইসঙ্গে তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রিফাইন্ড বা অন্য কোনোভাবে ‘গণহত্যাকারী’ আওয়ামী লীগের ফিরে আসার সুযোগ নেই।

প্রয়োজনে আবারও গণঅভ্যুত্থান হবে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) অভ্যুত্থানের অগ্রভাগে থাকা প্লাটফর্মটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এক বিবৃতিতে এ হুঁশিয়ারি দেন।

সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি আমরা লক্ষ করছি, কিছু রাজনীতিবিদ, আওয়ামী সিম্প্যাথাইজার ও সুবিধাভোগী কর্তৃক মূলধারার কিছু গণমাধ্যম আয়োজিত টেলিভিশন টকশো, সংবাদপত্রে প্রকাশিত কলাম ও জরিপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ইনিয়ে-বিনিয়ে নানা মোড়কে নিষিদ্ধঘোষিত, পতিত, ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে বয়ান তৈরি ও সম্মতি উৎপাদনের অপচেষ্টা চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্পষ্ট ভাষায় এই ঘৃণ্য অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।  

রিফাত রশিদ ও হাসান ইনাম বিবৃতিতে বলেন, মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়; তারা একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি, গণহত্যাকারী ও নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন। যারা বিগত দেড় দশকের দীর্ঘ শাসনামলে গুম, খুন, অপহরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, প্রকাশ্য দিবালোকে ধর্ষণসহ অগণিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত এবং সর্বশেষ জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জড়িত, যেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জ্বলন্ত প্রমাণ ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। সুতরাং বাংলাদেশের মাটিতে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ বা অন্য যেকোনো নামে হোক না কেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার বিন্দুমাত্র অধিকার নেই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, বাংলাদেশের মাটিতে ‘আওয়ামী অধ্যায়’ ’২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্টেই চূড়ান্তভাবে সমাপ্ত হয়েছে। অভ্যুত্থানোত্তর নতুন বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এখন সম্পূর্ণ অযোগ্য ও অপ্রাসঙ্গিক। তাই, ইনিয়ে-বিনিয়ে নানা মোড়কে আওয়ামী লীগের পক্ষে বয়ান তৈরি করে সম্মতি উৎপাদনের অর্থ হলো, আওয়ামী কর্তৃক সংঘটিত জুলাই গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়া; যা জুলাই আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি এবং সহস্রাধিক শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো ‘যদি-কিন্তু’ ছাড়া স্পষ্ট ভাষায় জানায়, অভ্যুত্থানোত্তর নতুন বাংলাদেশে যদি সম্মতি উৎপাদনের মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে ‘আওয়ামী পুনর্বাসন প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়, তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভ্যুত্থানপন্থি ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আবারও ‘অভ্যুত্থান’-এর ডাক দেবে। এ ছাড়া পতিত, ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিয়ে যদি নির্বাচনের কোনো পরিকল্পনা বা অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়, তাহলে অভ্যুত্থানপন্থি সকল ছাত্র-জনতা সেই নির্বাচন বয়কট করবে।

এফএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।