ঢাকা: মাদকাসক্তরা যেমন কোনো যুক্তি মানতে চায় না। তেমনি ক্ষমতার নেশায় খালেদা জিয়াও কোনো যুক্তি মানছেন না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
সোমবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশে মাদকাসক্তি প্রতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে মাদক বিরোধী সংগঠন ‘মানস’।
হাসানুল হক ইনু বলেন, মাদকের নেশায় মাদকাসক্তরা মাদক পেতে যেমন কোনো যুক্তি মানে না। তারা অন্য মাদকাসক্তদের সঙ্গে দোস্তি করে। তেমনি ক্ষমতার নেশাও ক্ষমতাবানদের যুক্তি থেকে দূরে রাখে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জঙ্গিবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে দোস্তি করছে।
মন্ত্রী বলেন, ধূমপান, ক্ষমতার নেশা ও মাদক খুবই খারাপ নেশা। সমাজ বাঁচাতে আমরা জঙ্গিবাদকে যেমন ছাড় দেবো না, তেমনি মাদকেও ছাড় দেবো না।
হাসানুল হক ইনু বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বর্তমান আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক এতক্ষণ মাদক বিরোধী অনেক কিছুই বলেছেন। তার বক্তব্যে মাদকসেবী বা ধুমপায়ীদের মধ্যে কি কোনো পরিবর্তন আসবে? তবে আমিও খালেদা জিয়াকে বলেছি বাচ্চাদের পরীক্ষার সময় আপনি হরতাল-অবোরোধ দেবেন না। কিন্তু তিনি তা শোনেন না।
তিনি আরো বলেন, পুরুষদের ধুমপান বা মাদকসেবন থেকে বিরত রাখতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। নারীরা যদি বলে ধুমপান করলে তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না তবে তা অনেক কাজে আসবে। এ দেশ গঠনেও নারীদের অনেক ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে কোনো নারী রাজকারের খাতায় নাম লেখায়নি। তারা ইজ্জত দিয়েছে কিন্তু রাজাকারের দলের হয়ে কোনো মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি করেনি। তাই দেশকে মাদকমুক্ত করতে নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে মাদক বিরোধী আইন রয়েছে। তারপরও দেশে মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। এ দায়ভার সরকারের স্বীকার করছি। তবে আইন বাস্তবায়নে তদারকি বাড়ানোর বিষয়টা ভেবে দেখা দরকার। এ জন্য মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে মাদক আইন আরো কঠোর করা দরকার।
ইনু বলেন, আইন আছে নীতিমালা নেই, আইন বাস্তবায়নে কোনো কর্মসূচি নেই। এগুলো থাকা দরকার।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার পরিস্থিতি তুলে ধরে ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, বছরে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ তামাকের কারণে প্রাণ হারায়। একই কারণে ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছে পরিসংখ্যান (২০০৪ সালের বাজেট) থেকে নেওয়া। বর্তমানে প্রতিবছর তামাকজনিত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। প্রতিদিন মৃত্যু ঘটছে ৬৮০ জনের। প্রতি ঘণ্টায় ২৮ জন এবং প্রতি দুই মিনিটে একজন।
মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাদক রুখতে আইন রয়েছে। তবে সে আইন বাস্তবায়ন করার মতো কার্যকর করার মতো কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। আজ পর্যন্ত মাদকের কারণে কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তাই আইন যারা বাস্তবায়ন করবে তাদের কাজ দেখভাল করার জন্য আরো একটি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫