শেরপুর (বগুড়া): বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করার জন্যে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির আগুনে পানি ঢেলে দিয়েছে মামলা।
চলমান অবরোধে সংঘটিত অপরাধের দায়ে উপজেলা ২০ দলীয় জোটের শতাধিক নেতাকর্মীর নামে ২ মামলায় উল্টে গেছে তাদের আন্দোলনের ছক।
সম্প্রতি আলুবোঝাই ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ২০ দলের শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে পৃথক ২টি মামলা করার পর থেকে নেতাকর্মীরা গ্রেফতার এড়াতে ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন। এরপর থেকে তাদের বাড়ি বাড়ি পুলিশের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকায় আন্দোলনের মাঠ ছেড়েই পালিয়ে গেছেন অনেক নেতাকর্মী।
২ মামলাতেই জোটের প্রথম সারির নেতাদের আসামি করা হয়েছে। ফলে ২০ দলের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও বগুড়া জেলায় ডাকা হরতালের কর্মসূচি পালনে পুলিশি গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা মিলছে না।
এর আগে এসব কর্মসূচি পালনে জোট নেতাকর্মীরা মাঠে শক্তিশালী অবস্থান জানান দেয়। পুলিশি বাধা ভেঙেই জোটের ডাকা মিছিল সমাবেশ করে তারা। কিন্তু ২ মামলায় প্রথম সারির নেতাদের আসামি করায় ২০ দলের সাজানো গোছানো সেই আন্দোলনের ছক লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ফলে চলমান আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে গা বাঁচিয়ে চলছেন এসব মামলায় অভিযুক্তরা।
গত শনিবার (১০ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর বাজার ও ভবানীপুর ইউনিয়নের ছোনকার ইটালী এলাকায় প্রায় একই সময়ে আলুবোঝাই ২টি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
পরদিন ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকের মালিকরা শেরপুর থানায় পৃথক ২টি মামলা করেন। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতের প্রথম সারির অন্তত ডজনখানেক নেতাসহ ২০ দলের শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
এই ২ মামলায় উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মানছুরুর রহমান, নায়েবে আমির কাজী আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান মিলন, পৌরসভার মেয়র শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বাধীন কুমার কুন্ডু, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাবুল করিম, শাহবন্দেগী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুস সালামসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ৫৫-৬২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এরমধ্যে সোমবার (১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত পুলিশ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাবুল করিম, শাহবন্দেগী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুস সালামকে গ্রেফতার করেছে।
মামলা ২টির তদন্ত কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলহাজ উদ্দিন ও এসআই ফারুক হোসেন বাংলানিউকে জানান, আসামিদের ধরতে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হলেও অযথা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫