ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের সদস্য ও বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দায়ের করা মানহানির একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. তুহিন মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৩ জানুয়ারি) এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আরেফিনের আদালত।
মামলাটির বাদী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী। তিনি গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে মোট তিনটি মামলা দায়ের করেন।
তিন মামলার মধ্যে মানহানির অভিযোগ আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ১৩ জানুয়ারির মধ্যে ড. তুহিন মালিককে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হকের আদালত।
মঙ্গলবার হাজির না হওয়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে ড. তুহিন মালিকের বিরুদ্ধে।
অন্য দু’টি মামলার শুনানি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সেগুলো এজাহার হিসেবে গণ্য করতে শাহবাগ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত বছরের ৩০ নভেম্বর লন্ডনের ওয়াটার লিলি গার্ডেন অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ নিয়ে কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনে বক্তব্য দেন ড. তুহিন মালিক। তিনি বলেন, ‘তারা সংবিধানটাকে তাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টো এবং দলীয় মেনিফেস্টো হিসাবে তৈরি করেছে এবং সেখানে সেভাবে ‘নাস্তিক্যবাদিতা’ ও ধর্মহীনতা’র বিষয় জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের তিন ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ প্রায় ৫২টি অনুচ্ছেদ, স্পেশাল অনুচ্ছেদ, সবচেয়ে স্পেশাল অনুচ্ছেদ কেয়ামত পর্যন্ত, বাংলাদেশ যতোদিন থাকবে কেউ সংশোধন করতে পারবে না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আইন করা হয়েছে, ৭ক অনুচ্ছেদ করে বলে দেওয়া হয়েছে, যদি কেউ এমনটা করে কিংবা করার চেষ্টা করে কিংবা সহায়তা করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ডতুল্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হবে। মানে ফাঁসি হয়ে যাবে। তাহলে কি হবে? মুজিবের কাহিনী, তার পরিবারের গানা-বাজনা, এগুলো বাতিল যে করতে চাইবে তাদেরও ফাঁসি হবে। যতোদিন পৃথিবী আছে সংবিধান পরিবর্তন হবে না। একমাত্র বিকল্প রয়ে গেছে সংবিধান বাতিল। কিসের জাতির পিতা, কিসের আর্দশ, কিসের চেতনা? কিছুই থাকবে না ইনশাআল্লাহ। ’
বাদী গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে জানান, গত বছরের ৩০ নভেম্বর লন্ডনে এক বক্তৃতায় বাংলাদেশের সংবিধান, দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কটূক্তি করেন ড. তুহিন মালিক।
তিনি জানান, তুহিন মালিক সংবিধানকে ‘বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের গানা-বাজানা’ বলার মতো ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বলেছেন, ‘কিসের সংবিধান কিসের কি? সব ভেসে যাবে। ’
গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের দায়িত্ব দেওয়া হযেছে রাজধানীর বনানী থানাকে। গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৪/ আপডেটেড: ২১০১ ঘণ্টা