ঢাকা: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকে মোকাবেলায় দ্রুতই সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গড়বে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। প্রশাসনকে নিয়ে জেলা পর্যায়ে যে আইন-শৃঙ্খলা কমিটি রয়েছে সে কমিটিতে ১৪ দলের নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এ সভায় উপস্থিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ বিষয়ে দ্রুতই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানোর কথা ব্যক্ত করেন, বলে সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
সভায় আগামী ১৭ জানুয়ারি রংপুরের মিঠাপুকুরে এবং ১৮ জানুয়ারি গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে ১৪ দলের জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া, এই মাসের মধ্যেই ঢাকার বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ১৪ দল মিছিল, পদযাত্রা ও শান্তি সমাবেশেরও আয়োজন করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নাসিম বলেন, সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের বোমাবাজি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ১৪ দলের স্থানীয় নেতাদের জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত করে এই কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি মূলত সন্ত্রাস বোমাবাজি প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে নাসিম বলেন, মেরুদণ্ডহীন বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। সংলাপ হবে না।
মোহাম্মদ নাসিম মিঠাপুকুরে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক জিঘাংসা পূরণে এ রকম হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। একের পর এক এসব হামলা তার নির্দেশেই হচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাসিম বলেন, যে দলের নেত্রীর ডাকে তার নেতাকর্মীরা মাঠে নামে না। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে। তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই আসে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, এবার তারা চূড়ান্তভাবে পরাজিত হবে। উঠে দাঁড়াবার সুযোগও থাকবে না। কারণ মেরুদণ্ডহীন বিএনপির উঠে দাঁড়াবার সুযোগ নেই।
সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির ধরণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নাসিম আরও বলেন, ১৪ দলের স্থানীয় নেতারা এ সব কমিটিতে থাকবেন। এর আগে যেখানে যেখানে এসব কমিটি বাদ গেছে, সেখানেও এবার করা হবে। সেখানে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে নেই সেখানে তাদের সম্পৃক্ত করা হবে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্য দল ও শক্তিকেও এসব কমিটিতে নেওয়া হবে। এই কমিটির নেতৃত্বেই দেশের প্রতিটি উপজেলা বা থানায় কমিটি গঠন করা হবে।
পাশাপাশি গত ১২ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী দেওয়া নির্দেশনার অনুযায়ী পাড়ায়-মহল্লায় সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি সন্ত্রাস প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে সহায়তা করবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কাছে আমরা সহযোগিতা চেয়েছি।
১৪ দলের এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অসিম কুমার উকিল, এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম আমিন, এস এম কামাল, ওয়াকার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের শরীফ নূরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির নূরুর রহমান সেলিম, ডা. শাহাদাৎ হোসেন, ন্যাপের এনামুল হক, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের অসিত বরণ রায়, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫, আপডেট ১৯৪৬