ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক নির্বাচনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখলেও, দক্ষিণের প্রার্থী সাঈদ খোকন নির্বাচন নিয়ে ‘আত্মবিশ্বাসী’।
দু’জনের প্রচারণা পদ্ধতিতেও রয়েছে ভিন্নতা।
নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণার ১১দিন অতিবাহিত হয়েছে। সব প্রার্থীর মতো আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই প্রার্থীও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে যাচ্ছেন। তুলে ধরছেন নিজেদের অবস্থান। প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন কোথাও কোথাও। বিনিময়ে চাইছেন ভোট।
গত ১০দিনে প্রচারণা চালানোর সময় আত্মবিশ্বাস নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী সাঈদ খোকন। ১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ক্রীড়া পরিষদ মিলনায়তনে ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত আমাদের এ ঢাকা। পুরো ঢাকা আমার নখদর্পণে। এখানকার সব সমস্যা আমি জানি, আমিই এগুলো সমাধান করতে পারবো।
আত্মবিশ্বাস নিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, আমি তরুণ-উদ্যমী-যুবক। আমিই সব পারবো।
অপরদিকে, উত্তরের মেয়রপ্রার্থী আনিসুল হক নির্বাচনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিচ্ছেন। একই সভায় তিনি বলেন, মেয়রপ্রার্থী হবো, স্বপ্নও ছিল না। এক সিদ্ধান্ত আমার জীবনকে পাল্টে দিয়েছে। এখন সকালে উঠে বউ আমাকে চেনে না। গত তিন সপ্তাহ আমাকেও পাল্টে দিয়েছে।
তিনি বলেন, শহরের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরছি। চিরচেনা ঢাকা প্রতিনিয়ত আমার কাছে নতুনভাবে ধরা দিচ্ছে। প্রতিদিন নতুন কিছু শিখছি, দেখছি। নতুন নতুন সমস্যা আমার সামনে আসছে। এসব আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি। আর এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই সামনে এগুচ্ছি।
জয়ের বিষয়েও বেশি আত্মবিশ্বাসী সাঈদ খোকন। ১১ এপ্রিল (শনিবার) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাঈদ খোকন বলেন, প্রক্রিয়াশীল শক্তির সঙ্গে আমাদের এ নির্বাচনী যুদ্ধ। ৭১’র পরাজিত শক্তির কাছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পরাজিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই আমাদের পরাজিত করে।
অন্যদিকে ১২ এপ্রিল (রোববার) বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর প্রচারণায় দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মাঠে নামলে সিটি নির্বাচনের লড়াই কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেছেন আনিসুল হক। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের টিএনটি মাঠ এলাকায় ষষ্ঠদিনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, শুনেছি খালেদা জিয়া তার দল সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নামবেন। এটা আমার জন্য একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ।
বিরোধীতার ক্ষেত্রেও অনেক এগিয়ে সাঈদ খোকন, কিন্তু বেশ কৌশলী আনিসুল হক। খোকন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরোধীতা করে বক্তব্য দিলেও বিরত থাকেন আনিসুল হক।
১৬ এপ্রিল মীরহাজীরবাগে এক পথসভায় সাঈদ খোকন বলেন, বিএনপি গত তিনমাসে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। এ হত্যার বিচারিক পক্রিয়া ব্যালটের মাধ্যমে আপনারা শুরু করবেন। আওয়ামী লীগ যা বলে তাই করে। ৪২ বছর পর স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার করতে পারলে, ওদের (বিএনপি) কেনো নয়? আপনাদের দোয়া ও সমর্থন পেলে বিএনপির তাণ্ডবের বিচার করবো।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় কে গেল না গেল, পরের কথা। তবে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হলে ঢাকার ‘বিভৎস’ অবস্থা হবে। গত তিনমাসের মতো আবারও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে। এ থেকে বাঁচতে চাইলে ইলিশ প্রতীকে ভোট দিন।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ঢাকা উত্তর থেকে আনিসুল হক টেবিল ঘড়ি ও দক্ষিণ থেকে সাঈদ খোকন ইলিশ প্রতীকে লড়বেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৫
এসইউজে/এসএন/জেডএস