ঢাকা: তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ছিল আখ্যা দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভোটগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৬টায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে প্রতি কেন্দ্রে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন, নিউজ পোর্টালগুলোর মাধ্যমে আমরা দেখেছি ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, কিছু কিছু কেন্দ্রে সমস্যা হয়েছিল কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, আমি নিজে এবং নির্বাচন কমিশনাররা ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছেন। সে সময় ভোটার, প্রার্থী, প্রার্থীদের এজেন্ট, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে। কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসার সময় কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হননি।
সিইসি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তিনটি কেন্দ্র গোলযোগের কারণে স্থগিত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- কমলাপুর রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়, শ্যামপুর আশরাফ মাস্টার উচ্চ বিদ্যালয় ও পুরান ঢাকার সুরিটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। এছাড়া আরও কিছু ভোটকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল। এসব কেন্দ্রে যাদের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচনের অর্ধেক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও বলছে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার জন্য সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ দেন সিইসি। এছাড়া নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সদা সতর্ক থাকার নির্দেশও দেন।
তিনি প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এগিয়ে নিতে অনুরোধ করছি।
বিভিন্ন দল সমর্থিত প্রার্থীর ভোট বর্জন বিষয়ে সিইসি বলেন, আমাদের কাছে কেউ ভোট বর্জন করার আবেদন করেননি। এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। আমরা অনেক অনিয়মের অভিযোগ প্রতিদিন পাচ্ছি। সব অভিযোগই তদন্ত করছি। যেগুলোর সত্যতা পাচ্ছি, সেসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, পুলিশকে আমাদের পর্যবেক্ষক নীতিমালা পড়ে শুনিয়েছি, যে সাংবাদিক এবং পর্যবেক্ষকরা কোথায় কোথায় যেতে পারবেন। তাই আপনাদের কাজে বাধা আসার কথা শুনার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশকে নিষেধ করেছি। সেই সঙ্গে এনশিউর করেছি।
সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেই কেবল সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করা হয়। কিন্তু তিন সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর মতো পরিস্থিতি হয়নি।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কেবল অর্ধেক শেষ হয়েছে। এখনো গণনা চলছে। সারারাত ধরে গণনা চলবে। হয়তো বুধবার (২৯ এপ্রিল) ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
‘তবে ভোটাররা যে ঠিকমতো বাড়ি ফিরে গেছেন এটাই স্বস্তি’-বলেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৫, আপডেট ১৮২৬, ১৯১৬
ইইউডি/আইএ