ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জনমত গড়ে তুলতে সেখানে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সকল বাংলাদেশির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চার দিনের কানাডা সফরের তৃতীয় দিনে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দেওয়া একটি সংবর্ধনা সভায় অংশ নিয়ে এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আত্মস্বীকৃত খুনির ফাঁসির রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এখন তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে রায় কার্যকর করে কলঙ্কমোচনের সব চেষ্টাই সরকার করবে।
একটি সভ্য দেশ কীভাবে অভিযুক্ত খুনিকে আশ্রয় দিতে পারে- এমন প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের সামনে এই দাবি রেখে যাচ্ছি, যে দেশে আপনারা বসবাস করছেন, সে দেশের জনপ্রতিনিধিদের চিঠি লিখুন এবং এই চেতনাজাগ্রত করুন, কেন এসব দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে।
তিনি বলেন, যতদূর আমরা জানি বঙ্গবন্ধুর এক খুনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছে। একজন কানাডায়, দু’জন পাকিস্তানে এবং অপর দু’জন কোথায় আছে সন্ধান পাওয়া যায়নি, আমরা তাদের আটকের জন্য খুঁজছি।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা কেন খুনিদের লালন করছে এবং আশ্রয় দিচ্ছে সে বিষয়ে দেশ দু’টির সরকারকে বাংলাদেশ বলেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বলেছে কানাডার সংবিধানে উল্লেখ আছে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ থাকলে তাকে তার দেশে ফেরত পাঠাবে না। এটি কী ধরনের কথা! পিতা হারানোয় আমি ক্ষতিগ্রস্ত। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি তারা হত্যাকারীদের আশ্রয় দিতে চায় তাহলে তো সব হত্যাকারী সে দেশের আশ্রয় চাইবে। তারা কি তাহলে সকল খুনিকে আশ্রয় দেবে? এর অর্থ হলো- যেদেশে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান নেই, সেদেশ হত্যাকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এজন্য জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামনে আমি এই প্রশ্ন রেখে গেলাম।
তার সরকার ১৯৯৬ সাল থেকে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বাধার সম্মুখীন হয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে যারা ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে সেই ঘৃণ্য খুনিদের বিচার বন্ধের জন্য অনেক বড় জায়গা থেকে টেলিফোন এসেছে। আমি তাদের বলেছি যে, আমাদের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন এবং এখানে আমাদের দেশের আইন রয়েছে এবং আইন অনুযায়ী রায় কার্যকর হবে।
কানাডা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মো. মাহমুদ মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান প্রিন্সের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬/আপডেট ১৬৪১ ঘণ্টা
এইচএ/এমএমকে