ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে জেরা করছেন আসামিপক্ষ।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ছাড়াও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হারুন-অর রশিদকে প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে পুনরায় জেরা করছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান।
হারুন-অর রশিদ এর আগে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ও বাদী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার পর তার জেরাও সম্পন্ন হয়েছিল। তবে খালেদার আবেদনে উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দেওয়া তার সাক্ষ্যের বিষয়ে তাকে ফের জেরা করা হচ্ছে।
জেরার পরে এ মামলায় ৩৪২ ধারায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরার দিন ধার্য রয়েছে বৃহস্পতিবার।
দুই মামলায়ই হাজিরা দিতে আদালতে আছেন খালেদা জিয়া। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে রওনা দিয়ে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে আদালতে পৌঁছান তিনি।
দুদকের পক্ষে আছেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
জামিনে থাকা জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আদালতে উপস্থিত আছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
এ মামলায় জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। মামলাটিতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদসহ মোট ৩২ জন সাক্ষী।
অন্যদিকে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন। তারা আদালতে হাজির হয়েছেন এবং তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া হাজিরা দাখিল করেছেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এমআই/এএসআর