সোমবার (০৮ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলাটিতে ৩৪২ ধারায় প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য রয়েছে। তবে বেলা সাড়ে এগারটায় খালেদা হাজির হওয়ার পর সময়ের আবেদন জানান তার আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। রাষ্ট্রপক্ষে আছেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
সময়ের আবেদনে বলা হয়েছে, এ মামলায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। আবেদনটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম চলতে পারে না।
আসামিপক্ষের অন্য আইনজীবীদের মধ্যে আছেন অ্যাড. আব্দুর রেজ্জাক খান, অ্যাড. জয়নুল আবেদিন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাড. সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাড. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, অ্যাড. বোরহান উদ্দিন ও অ্যাড. রেজাউল করিম সরকার।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাস ও শামা ওবায়েদ।
গত ২৬ এপ্রিল হাইকোর্টে আদালত পরিবর্তনের ওই আবেদন জানান খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ভূঁইয়া। বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত বদলের আবেদন মঞ্জুরের দেড় মাস পর আবারও করা ওই আবেদনে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশও চাওয়া হয়েছে।
এর আগে বিচারকের প্রতি অনাস্থা দেন খালেদা। কিন্তু গত ০২ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি খারিজ করেন বিচারিক আদালত। এরপর আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। যেটি মঞ্জুর হয় গত ০৮ মার্চ। হাইকোর্ট মামলাটি মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেন।
এ আদেশ অনুসারে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম এখন কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে চলছে। গত ১৩ এপ্রিল খালেদা জিয়া কামরুল হোসেন মোল্লার প্রতিও অনাস্থা দেন। আদালত সে আবেদন নাকচ করে দিলে হাইকোর্টে আবেদন জানান তিনি।
খালেদার আইনজীবীরা বলছেন, বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইন শাখার মহাপরিচালক ছিলেন। আর ওই সময় এ মামলাটির দেখ-ভাল করেছেন তিনি। তাই তার প্রতি খালেদা জিয়ার আস্থা নেই।
এ আবেদন ও অসুস্থতাসহ নানা কারণ দেখিয়ে কয়েকবার আদালতে অনুপস্থিত থেকে আইনজীবীদের মাধ্যমে আবেদন জানিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে সময় নিয়েছেন খালেদা। সর্বশেষ গত ২৭ এপ্রিল আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে ০৮ মে পুনর্নির্ধারণ করেন আদালত।
২০০৮ সালের ০৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এমআই/এএসআর