ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে কোনো ছাড় দেবে না আ.লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৭ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৭
বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে কোনো ছাড় দেবে না আ.লীগ

ঢাকা: আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপির কোনো শর্ত বা দাবির মুখে কোনো ধরনের ছাড় দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিদ্যমান পরিস্থিতি মেনেই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে।

সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ চায় আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তাদের কোনো শর্ত মেনে নেওয়া বা তারা যে দাবিগুলো করে আসছে তাতে কোনো ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ।

বিদ্যমান পরিস্থিতি মেনে নিয়েই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে বিএনপি না এলে দলটিকে ছাড়াই আগামী নির্বাচন করার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

এরই মধ্যে বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি তুলেছে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন বর্তমান সরকারের(শেখ হাসিনার নেতৃত্বে) অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না। একটি সহায়ক নিরপেক্ষ সরকার গঠিত হবার পর সেই সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করছে তারা। তবে বিএনপির সেই দাবিকে নাকচ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে সংবিধানের বাইরে কোনো ধরনের সরকার গঠনের পথে আওয়ামী লীগ যাবে না বলে দৃঢ় অবস্থান নিয়ছে। ক্ষমতাসীন দলর নীতিনির্ধারকরা বাংলানিউজের সঙ্গে এমন দৃঢ় অবস্থানের কথাই জানালেন।
 
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিজউকে বলেন, নির্বাচন সংবিধান মেনে যথানিয়মেই হবে। সেখানে কারো কোনো শর্ত থাকতে পারে না। কোনো দাবি মানার সুযোগ নেই।

একই ধরনের মন্তব্য করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সারাবিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই হবে। সহায়ক সরকারের কথা আমাদের সংবিধানে বলা নেই। অন্য কোথাও বলা নেই।

এদিকে আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি তুলেছে বিএনপি। পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে যেসব মামলা রয়েছে সেসবের প্রত্যাহার এবং যারা জেলে রয়েছেন তাদের মুক্তির দাবিও জানানো হচ্ছে। এ দাবিরর ব্যাপারেও সরকারের ইতিবাচক সাড়া নেই। এসব বিষয়েও কোনো ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ সরকার।

দলটির নেতারা বলছেন, বিগত দিনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে জামায়াতের সঙ্গে মিলে বিএনপি হরতাল-অবরোধসহ আন্দোলনের কর্মসূচির নামে ব্যাপক সহিংসতা,নাশকতা ও নৈরাজ্য চালিয়েছে। এরপর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করতে এবং ২০১৫ সালে সরকার পতন ঘটানোর কথা বলে একই ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা করেছে। এইসব ঘটনায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট অভিযোগে মামলা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলগুলোরও বিচার চলছে। এসব মামলায় খালেদা জিয়ার সাজাও হতে পারে। এমনকি নির্বাচনের আগেই মামলার বিচারের রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এইসব মামলার ব্যাপারে সরকার কোনো শিথিলতা দেখাবে না বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
 
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তাদেরকে (বিএনপিকে) আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই মামলা মোকাবেলা করতে হবে। সুনির্দিষ্ট অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যেসব মামলা হয়েছে, সেসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি করার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে যে দাবিগুলো তোলা হয়েছে সেইসব দাবি আদায়ে বিএনপিকে আন্দোলনে যাওয়ার সুযোগও দেবে না সরকার। বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল সেই ধরনের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে সরকার।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, এসব ইস্যুতে বিএনপি কোনো কর্মসূচি দিলে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে আন্দোলন ঠেকানোর কৌশল হিসেবে সেগুলোও কাজে লাগানো হতে পারে।
 
এ বিষয়ে আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কোনো নাশকতামুলক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। আর সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনিও বসে থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৭
এসকে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।