শুক্রবার (২ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে বিকল্পধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, তাদের জোটের একজন ছাড়া ২০ জন নেতা বক্তব্য দিয়েছেন।
‘তাদের কিছু দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। তারা লেভেল প্লেইং ফিল্ডের কথা বলেছে। আমরা বলেছি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে। তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রীরা পতাকা ব্যবহার করবেন না। এমপিদের ক্ষমতা থাকবে না। নতুন কোনো প্রকল্প নেওয়ার অধিকার সরকারের থাকবে না। কোনো প্রকল্প উদ্বোধনও করা যাবে না। এগুলো আমরা তাদের জানিয়েছি। ’
তিনি বলেন, তারা নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব বিষয়ে বলেছেন, সেনাবাহিনী সারাবিশ্বে অবদান রাখছে। যততত্র সেনাবাহিনীকে ব্যবহার না করাই ভালো। সেনাবাহিনীকে বির্তকিত করা ঠিক হবে না। বিধি অনুযায়ী অবশ্যই সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে। তবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে আমরা বলেছি আরপিও অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে, সেটা তাদের বিষয়। এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে পারবো না। তবে সিটি করপোরেশনের মতো কিছু জায়গায় ইভিএম ব্যবহার হতে পারে।
‘তারা (যুক্তফ্রন্ট) রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, তাদের জানামতে কারও নামে রাজনৈতিক মামলা হয়ে থাকে, আটক করা হয়, তাহলে তার একটি তালিকা দিতে। তারপর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। ’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয় তাদের মনোভাব ইতিবাচক। তাদের কিছু দাবি তো আমরা মেনে নিয়েছি। সব দাবি তো আর মানা যাবে না। নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে তারা কোনো জোর দাবি করেনি। চলমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে তারা ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
এর আগে রাত ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে গণভবনে শুরু হওয়া এ সংলাপ চলে প্রায় তিন ঘণ্টা।
সংলাপে বি. চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে।
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, সহ-সভাপতি মাহমুদা চৌধুরী, মাহবুব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, নির্বাহী সদস্য সাবেক এমপি মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটির (বিএলডিপি) সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার দাস, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান (এনডিপি) খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা ও এনডিপির মহাসচিব মনজুর হোসেইন ঈসা।
বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী দেশের বাইরে থাকায় তিনি এ সংলাপে যোগ দেননি বলে জানিয়েছেন বি. চৌধুরীর প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের নেতারাই যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে উপস্থিত আছেন।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাদের সংলাপে ডাকার পরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসতে আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি দেন এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। চিঠি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাতে সাড়া দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৮
এসকে/এসই/এএ