এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে যুবদল নেতা আলেকজান্ডার ও বিএনপি নেতা রাফি পান্না ভোট করছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোট করায় তাদের দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকাল থেকে শপথ না নেওয়া বিএনপির এমপি মোশারফ হোসেনের পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের ডাক দিয়ে সাটানো পোস্টার নিয়ে পুরো উপজেলায় অনেকটা হৈ-চৈ পড়ে যায়।
এর আগে যুবদল থেকে বহিস্কৃত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলেকজান্ডার কারাগার থেকে তার লোকজনের কাছে একটি চিঠি পাঠান। শুক্রবার (১৫ মার্চ) তার অনুসারীরা কারাগার থেকে লেখা সেই চিঠি বিতরণ শুরু করেন। এর মাত্র ১২ ঘণ্টার মাথায় এমপি মোশারফের পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের ডাকা দিয়ে পোস্টার সাটানো হয়।
মোশারফ হোসেনের ছবি সম্বলিত পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘আওয়ামী বাকশাল সরকারের দালালী, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে বাধা, ক্ষমতালোভী বিশ্বাসঘাতক আলেকজান্ডার ও রাফি পান্নাকে ভোট দানে বিরত থাকার মাধ্যমে বর্জন করুন। ভোট বর্জনের ডাক শিরোনামের শেষে লেখা রয়েছে দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে মোশারফ হোসেন, সংসদ সদস্য বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার (১৬ মার্চ) সকালের দিকে এসব পোস্টার প্রথমে কিছু কিছু মানুষের নজরে পড়ে। এরপর সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নজরে চলে আসে পোস্টারগুলো। নন্দীগ্রাম পৌরশহরসহ উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এসব পোস্টার সাটানো হয়েছে। ঘটনাটি পুরো উপজেলায় হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছে। এ নিয়ে চায়ের স্টলগুলোয় যেন আলোচনার ঝড় বইছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে পোস্টারগুলো সাটানো হয় ধারণা করছে মানুষজন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে এমপি মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার একটি ঘনিষ্ট সূত্র বাংলানিউজকে জানান, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় যুবদল ও বিএনপির এই দুই নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত ভোটে অংশ না নেওয়া। এমনকি নেতাকর্মীরাও যেন ভোট কেন্দ্রে না যায় সে বিষয়েও দলের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা রয়েছে। তাই বিএনপি এ প্রহসনের নির্বাচনের বিপক্ষে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা দলের নেতাকর্মী, সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। সেই অনুরোধ হিসেবে পোস্টার সাটানো হয়েছে- যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকজন নেতার ভাষ্য, বিএনপির সাধারণ কর্মী সমর্থকরা শপথ না নেওয়া দলের সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। অন্যরাও যেন প্রহসনের এ নির্বাচনে ভোট দিতে না যায় সে জন্য চায়ের স্টল থেকে শুরু করে সর্বত্র প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। বিএনপি ভোট বর্জনের ডাক দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানোয় আওয়ামী লীগের এ প্রার্থীর জয় অনেকটা সহজ হবে বলে দলের অনেকেই মনে করছেন। এক্ষেত্রে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পাশাপাশি নাম প্রকাশেও অনীহা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৯
এমবিএইচ/এসএইচ