ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মোকাব্বির খানকে নিয়ে গণফোরামে উত্তেজনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
মোকাব্বির খানকে নিয়ে গণফোরামে উত্তেজনা গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলের উদ্বোধনী বক্তব্য দিচ্ছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান কাউন্সিলে উপস্থিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। 

এ নিয়ে দলীয় ফোরামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি ২/১ জন নেতা গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কাউন্সিল ত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে কাউন্সিলে উপস্থিত হননি দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল ডাকা হয়েছে। এই কাউন্সিলের অ্যাজেন্ডায় ছিল দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানকে বহিষ্কারের বিয়ষটি।  

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মোকাব্বির খান উপস্থিত হন কাউন্সিল মঞ্চে। বসেন দলীয় সভাপতি ড. কামাল হোসেনের পাশে। এতে মঞ্চ ও সামনে বসা কাউন্সিলররা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

মঞ্চে যারা বক্তৃতা দিয়েছেন তাদের প্রায় সবাই মোকাব্বির খানের সংসদে যোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অভিমত তুলে ধরেন।  

ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে গণফোরামের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক কাউন্সিল শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই মঞ্চ থেকে নেমে বেরিয়ে যান। পরে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন যে দ্বৈত নীতিতে দল চালাচ্ছেন সেভাবে রাজনীতি চলে না।

তার ভাষ্য, ড. কামাল হোসেন সংসদে শপথ নেওয়ার কারণে মোকাব্বির খানকে তার চেম্বার থেকে বের করে দিয়ে নাটক করেছেন। তিনিই আবার তাকে সংসদে যেতে বলেছেন। একইভাবে দলীয় কাউন্সিলে মোকাব্বির খানকে আসার দাওয়াত দিয়েছেন তিনিই।  

‘দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত ছিল আজকের কাউন্সিলে মোকাব্বির খানকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু তাকে মঞ্চে বসতে দিয়ে ড. কামাল হোসেন ঠিক করেননি। ’

গণফোরাম নেতা পথিক বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনে যারা বক্তব্য দিয়েছেন তারা সবাই মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আর দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু গত ২০ এপ্রিলের সভায় রাগ করে চলে গেছেন। তিনি কাউন্সিলে যোগ দেননি।

দলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক খান সিদ্দিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনে মোকাব্বির খানকে কে দাওয়াত দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে আমরা গত ২০ এপ্রিল দলীয় বৈঠকের পর মোকাব্বির খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তিনি এখন পর্যন্ত নোটিশের কোনো জবাব দেননি। তাকে মঞ্চে দেখে সবাই ক্ষুব্দ হয়েছেন।  

‘মঞ্চে তার বিরুদ্ধে তার সামনে যে ধরনের বক্তব্য এসেছে লজ্জা থাকলে মাটি খুঁড়ে তখনই নিচে চলে যাওয়া উচিত ছিল। ’

জানা গেছে, দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে বিশেষ এই কাউন্সিল শেষ হয়েছে।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজেই বিব্রতবোধ করছি। মোকাব্বিরের আচরণে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই। ড. কামাল হোসেন নিজে কেন বিষয়টা বুঝতে পারছেন না সেটাই আমার বোধগম্য নয়।

ড. কামালের দ্বৈত নীতির বিষয়ে দলের সবাই কাউন্সিলে বক্তব্য রেখেছেন বলেও জানান মন্টু।  

তিনি বলেন, মোকাব্বিরের শপথ নেওয়ার পক্ষে দলের কেউ নেই। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

দলের নতুন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থাকবেন কি না জানতে চাইলে মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, এটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে। আমি আপাতত কিছু বলতে পারছি না।

কাউন্সিলে কেন যাননি এমন প্রশ্নের জবাবে অনেকটা বিব্রত বোধ করেন আওয়ামী লীগের এক সময়ের এই জাঁদরেল নেতা। তিনি বলেন, শারিরীকভাবে আমি সুস্থ নই।   

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
এমএইচ/এমএ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।