ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের দাবি বিএনপির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের দাবি বিএনপির বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রামণের ব্যাপকতার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মহাদুর্যোগ’ মোকাবিলায় ‘জাতীয় টাস্কফোর্স’ গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চতুর্দিকে অন্ধকার ও হতাশা।

করোনা দুর্যোগের নানামুখী প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে মনে হয়। এমতাবস্থায় এ পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে সুসমন্বিত ও সুবিবেচিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, ত্রাণ বিতরণ, বিভিন্ন সেক্টারে প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজ বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্যে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব আমরা করছি।

তিনি বলেন, এ টাস্কফোর্সে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করে এ টাস্কফোর্সকে অর্থবহ ও গতিশীল করার মাধ্যমে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। আমাদের লড়াই করতে হবে এবং সেই লড়াইয়ে অবশ্যই জয়ী হতে হবে।

টাস্কফোর্স গঠনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, এখন যে পরিস্থিতি টাস্কফোর্স গঠন করলে সুসমন্বিত, সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। নোভেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের ভাষায় কোনো খাদ্যের ঘাটতি নয়, খাদ্য বণ্টনে অনিয়ম, দুর্নীতি, সিদ্ধান্তহীনতা, সুশাসনের অভাব দুর্ভিক্ষের কারণ হতে পারে। তাই এখনই খাদ্য ও ত্রাণ বণ্টন এবং করোনার পরবর্তী পুনর্বাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ প্রক্রিয়াটিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অগ্রাধিকার বিষয়গুলো কী হতে পারে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবার আগে এখন স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও টেস্ট টেস্ট টেস্ট প্রয়োজন। রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়াটা সবচেয়ে আগে। যাদের আইসোলেশনে নেওয়া হচ্ছে এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় যেটা সমস্যা দেখা দিয়েছে যারা দিন আনে দিন খায়-দিন মজুর যাদের বলা হচ্ছে যে, ঘরে থাকো। ঘরে থাকলে তো খাওয়া আসছে না। এদের কাছে খাদ্য পৌঁছানো, তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা এবং তাদের বাঁচিয়ে রাখা সবচেয়ে গুরুত্ব পাওয়া উচিত, টপ অগ্রাধিকার পাওয়া প্রয়োজন। এটার জন্য উপযুক্ত হচ্ছে সামরিক বাহিনী। তারা স্থানীয় যে প্রশাসন আছে, জনপ্রতিনিধি আছে, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনগুলো আছে তাদের নিয়ে এ কাজটা সহজে করা যেতে পারে। অতীতে দুই-একবার এ কাজগুলো হয়েছে তাদের নিয়ে। তাদের (সামরিক বাহিনী) সাংগঠনিক যে দক্ষতা, তারা চুরি-টুরির মধ্যে থাকবে না-এ জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সময়ে।

তিনি বলেন, আমরা ঐক্যের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাম গণতান্ত্রিক জোট বা বাম মোর্চার ঐক্যের একটি পরামর্শ সভায়ও আমি যুক্ত হয়েছিলাম। আমরা কোনো রকমের সংকীর্ণতায় ভুগতে চাই না। আমরা মনে করি যে, এখন জাতীয় ঐক্যটা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

বিএনপি কোনো কাজ করছে না বলে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীদের যেসব অভিযোগ করেছেন এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, বিষয়টা হচ্ছে যে, একটা রাষ্ট্রের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে সরকার। সরকারের যদি জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকে, তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব থাকে না, মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট থাকে না। যার ফলে এটা সরকার উপলব্ধি করছে না যে, এখন যেটা দরকার সবাইকে এক জায়গায় আনা। তাদের মধ্যে একটা ধারণা সৃষ্টি করা যে, আমরা যা কিছু করছি-ঐক্যবদ্ধভাবে করছি। ভারতে দেখুন, সেখাকার প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে কথা-বার্তা বলেছেন সমস্ত বিরোধী দলের সঙ্গে। অন্যান্য রাজ্যের চিফ মিস্টিনারের সঙ্গে উনি কথা বলছেন, কথা বলেই কিন্তু তিনি তার কাজটা করছেন। কিন্তু আলাপ-আলোচনা করে নিচ্ছেন সবার সঙ্গে। সো দ্যাট এভরি বডি উইল ফিল উই আর হিয়ার, উই আর অলসো কনট্রিবিটিং। এটা খুবই প্রয়োজন তো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
এমএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।