ঢাকা: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা দিবালোকের মত স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণই বলে দেয় জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিল।
বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) নবারুণ ও সচিত্র বাংলাদেশ মাসিক পত্রিকা দু’টির মুজিববর্ষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘জিয়া নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ জড়িত’-এর জবাবে ড. হাছান বলেন, ফখরুল সাহেবরা প্রতিবছর আগস্ট মাস এলে এ কথাগুলো বলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের সময় সাক্ষী ও আসামিরা যে জবানবন্দি দিয়েছে সেগুলো রেকর্ডেড। তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন কখন, কোথায় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, কীভাবে সম্মতি দিয়েছে। তার সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
ডা. হাছান বলেন, আমি মির্জা ফখরুলকে এ ধরনের জঘন্য মিথ্যাচার পরিহার করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রসিডিং পড়ার অনুরোধ জানাবো। প্রয়োজনে বিচারের বৃত্তান্ত জনসম্মুখে নিয়ে আসবো। তাহলে মানুষ জানতে পারবে আসামিরা তাদের জবানবন্দিতে কি স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল এটা কর্নেল ফারুক এবং রশিদ দুজনই ১৯৭৬ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশনে চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়ে স্বীকার করেছে। জিয়া যদি মোশতাকের আস্থাভাজন না হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তাকে কেন সেনাপ্রধান করা হলো? বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার।
হাছান মাহমুদ বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল তা নয়, তিনি মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের দোসর ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় কারো বাড়িতে কোনো মুক্তিযোদ্ধা আশ্রয় বা খাবার পেয়েছে জানতে পারলে পাকিস্তানি সেনা কিংবা রাজাকার, আলবদররা সেই বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। নির্যাতন করেছে।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান রণাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধ করে আর তার স্ত্রী এবং পুত্ররা পাকিস্তানিদের কাছে মেহমানের মতো থাকে, এ থেকেই গোমরটা বোঝা যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জিয়াউর রহমানের কাছে পাকিস্তানি কর্নেল বেগের যে চিঠিতে লেখা ‘তুমি চিন্তা করো না, তোমার স্ত্রী-পুত্ররা ভালো আছে এবং তোমার কাজে আমরা সন্তুষ্ট’ এগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই মিথ্যার ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে বিএনপি। মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে-থাকতে এখন তাদের দলও ছোট হয়ে আসছে।
মন্ত্রী এ সময় নবারুণ ও সচিত্র বাংলাদেশ মাসিক পত্রিকার মুজিববর্ষ সংখ্যা প্রকাশের জন্য ডিএফপিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তুলে ধরার জন্য এ প্রকাশনাগুলো ভূমিকা রাখবে। বাঙালিদের জন্য পৃথিবীতে এটিই একমাত্র জাতি রাষ্ট্র। তাই বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শকে জানা গুরুত্বপূর্ণ।
সচিব মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। সূচনা বক্তব্য দেন ডিএফপির মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলম ও খাদিজা বেগম, বিটিভির মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহম্মদ কামরুজ্জামান, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামুল কবীর, বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন, বাসসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২১
জিসিজি/কেএআর