ঢাকা: আগামী ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে মাঠে নামবে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যে এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপণ্য মূল্য বৃদ্ধিতে জনগণের ভোগান্তি, ভোলা জেলা বিএনপির সমাবেশে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হওয়া, দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিবাদে তৃণমূল পর্যায়ে সভা, সমাবেশ, মিছিল করে জনগণকে অবহিত করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলের বিভাগীয় সমন্বয়ক টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপির মহাসচিবের স্বাক্ষরিত চিঠি ইতোমধ্যে টিম প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও মহানগর সভাপতি/আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিব ও যুগ্ম-আহ্বায়কদের বলা হয়েছে, আপনি ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন যে গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়া, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশ গুলি করে দলের দুজন নেতা নূরে আলম ও আবদুর রহিমকে হত্যার প্রতিবাদে আগামী ২২ আগস্ট থেকে উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে সভাসমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলা, থানা, পৌর বিএনপির কর্মসূচির তারিখ নির্ধারণ করবেন জেলা নেতারা। ২২ আগস্ট থেকে প্রতিদিন প্রতিটি জেলা/মহানগরের কমপক্ষে একটি উপজেলা অথবা থানায় কর্মসূচি পালন করা হবে। ওই কর্মসূচিতে জেলার নেতা, সংশ্লিষ্ট জেলার কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মসূচির তারিখ নির্ধারণ করবেন থানা/উপজেলা/পৌরসভার নেতারা। ২২ আগস্ট থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি ওয়ার্ড/ইউনিয়নে কর্মসূচি পালন করতে হবে। কর্মসূচিতে উপজেলা/থানা/পৌরসভার নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের স্ব স্ব ইউনিটের নেতারা কর্মসূচি সফল করতে সার্বিকভাবে সহযোগীতা করবেন। এ বিষয়ে সংগঠনগুলির কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সার্বিক সমন্বয় করবেন এবং ইউনিটগুলোকে নির্দেশ দেবেন। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে সার্বিকভাবে সমন্বয় করবেন। প্রতিটি ইউনিটের কর্মসূচির তারিখ নির্ধারণ করে কেন্দ্রে জানাবেন।
বিএনপির মিডিয়া সেল সুত্র জানায়, এসব কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। টিম লিডার হিসেবে রংপুর বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ এমপি। রাজশাহী বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। খুলনা বিভাগে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বরিশাল বিভাগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। ঢাকা বিভাগে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। ময়মনসিংহ বিভাগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার। ফরিদপুর বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মশিউর রহমান। সিলেট বিভাগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। কুমিল্লা বিভাগে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যন বরকত উল্লাহ বুলু। চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান।
এসব টিমের সদস্য থাকবেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির নেতারা, সাবেক সংসদ সদস্য, সভাপতি/ আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিব, যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা।
জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলানিউজকে বলেন, দলের মহাসচিব ঘোষিত তৃণমূলে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল সফল করতে ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে সবাইকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কর্মসূচি সফল করতে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত আছে। জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়া, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশ গুলি করে দলের দুজন নেতা নূরে আলম ও আবদুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে আগামী ২২ আগস্ট থেকে উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এই সভা সমাবেশের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে মেসেজ পৌছাতে চাই। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানসহ দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
এমএইচ/এসএ