ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

গণতন্ত্র ফেরাতে তারেকের নেতৃত্ব অপরিহার্য: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
গণতন্ত্র ফেরাতে তারেকের নেতৃত্ব অপরিহার্য: ফখরুল

ঢাকা: গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে তারেক রহমানের নেতৃত্ব ‘অপরিহার্য’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ দিন দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা উপলব্ধি করেছি যে, বাংলাদেশের রাজনীতিকে পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু রাজনীতিতে পরিণত করা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা, গণতন্ত্রকে ধবংস করে দেওয়ার যে হীন চক্রান্ত, সেই চক্রান্ত থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা আকাঙ্ক্ষা জনগণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, ৭টি বিভাগীয় সমাবেশে মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, মানুষের যে আবেগ, মানুষের কষ্ট করে সামনে এগিয়ে আসা, মানুষের প্রাণ দেওয়া—এই ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, তারেক রহমান আমাদের জন্য কতটা অপরিহার্য।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বিনা কারণে তাকে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হত্যা করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। তারপরেও দেখেন মানুষের স্বাধীনতার জন্যে, মুক্তির জন্যে কতটা আবেগ, কতটা আকুতি। কেউ থেমে থাকছে না। শত বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে মানুষ একাত্মতা ঘোষণা করছে এই মুক্তির আন্দোলনের সঙ্গে। আমরা জীবনপণ লড়াই করছি। আমাদের সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। এই লড়াইয়ে, এই সংগ্রামে আমাদের জয়ী হতে হবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবন বাজি রেখে এই সংগ্রামে নেমে পড়েন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ভোলা ও যশোরে বিএনপির ৭ নেতাকর্মীর প্রাণ হারানোর প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্যে। আজকে সেই মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান। আমরা সবাই জানি কী নিদারুণ যন্ত্রণা, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ১/১১-তে তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, আমরা জানি তাকে অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করার পরে কারাগারে রেখে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা ও হত্যা করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত তিনি বেঁচে আছেন, তিনি আমাদের অনুপ্রাণিত করছেন প্রতিমুহূর্তে।

ছাত্রদল নেতা নয়নকে সরাসরি গুলি করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সোনারামপুর ইউনিয়নে আমাদের ছাত্রদলের যে নেতা প্রাণ হারিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তার প্রতি আমরা আজকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। নয়ন মিয়া তার নাম। গতকাল তাকে আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সরাসরি গুলিতে তার পেটের সমস্ত নাড়ি-ভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে। আমি ডা. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে গতকাল কথা বললাম। খুব কাছে থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে।

নিজেদের মধ্যে সংঘাত নয় জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি শুধু একটা অনুরোধ করব, যারা শহীদ জিয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করেন, যারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, যারা তারেক রহমানের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন তারা দয়া করে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে এখন কোনো সংঘাত সৃষ্টি করবেন না।

তিনি বলেন, খুব কষ্ট হয় একদিকে আমার ভাইয়ের বুলেটবিদ্ধ মৃতদেহ (ছাত্রদলের নেতা নয়ন) পড়ে আছে মর্গের মধ্যে। আর আপনারা কমিটির জন্য এখানে হামলা করেন। এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। কারা তারা যারা এই সময় এই ধরনের সমস্যা এখানে করেছে? আমি অনুরোধ করবো এখানে রিজভী সাহেব আছেন। তাদের নাম ঠিকানা বের করে অবিলম্বে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করার সমস্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ দিন সকাল সাড়ে ৮টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা ভোলার চরফ্যাশনের কমিটি নিয়ে দুই পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। পরে নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), আব্দুল কুদ্দুস, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আবদুল সামাদ আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এম এ মালেক, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, ইয়াসীন আলী, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।