ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের খবরে টিকিট ফেরত দিচ্ছেন ইউরোপ প্রবাসীরা

শাহ মো. তানভীর, পর্তুগাল থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের খবরে টিকিট ফেরত দিচ্ছেন ইউরোপ প্রবাসীরা

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।  

এখন থেকে ইউরোপ ফেরত যাত্রীদের সঙ্গে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার সনদ থাকলেও বাধ্যতামূলক ১৪ দিন করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে তাদের।

এমন খবরে ইউরোপে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা উদ্বিগ্ন ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ১৪ দিন বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।  

বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের বিষয়ে গত সোমবার (২৯ মার্চ) রাত ১২টা থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছেন সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান। এছাড়া যাত্রীদের নিজ খরচে হোটেলে থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।

ইউরোপের দেশ স্পেনে অবস্থানরত সিলেটের আব্দুল হান্নান জানান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রমজান ও ঈদ উদযাপন করার জন্য এপ্রিলে দেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশে ফিরে নিজ খরচে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে- এটা শোনার পর তিনি টিকিট বাতিল করেছেন।  

তিনি বলেন, দেশে যাব মাত্র এক মাসের জন্য। দেশে গিয়ে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকলে অর্ধেক সময়তো হোটেলেই শেষ হয়ে যাবে। এছাড়া কোয়ারেন্টিনের খরচও পড়বে অনেক। তাই তিনি টিকিট বাতিল করেছি।

এ বিষয়ে পর্তুগালে ক্ষমতাসীন স্যোশালিস্ট পার্টির নেতা শাহ আলম কাজল বলেন, ইউরোপ ফেরত যাত্রীদের সঙ্গে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার সনদ থাকলেও বাধ্যতামূলক নিজ খরচে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, যা প্রবাসীদের জন্য সত্যিই দুশ্চিন্তার বিষয়। আমার জানা মতে, গত কয়েকদিন আগে আমার পরিচিত এক ভাই ইংল্যান্ড থেকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে যান অসুস্থ মাকে দেখার জন্য। কিন্তু দেশে যাওয়ার পর কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় তার মা মারা যান। তিনি জানাজায় অংশ নেওয়া তো দূরের কথা, মায়ের মরদেহও দেখতে পারেননি।  

তিনি করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের বদলে হোম কোয়ারেন্টিনের পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বকুল খানের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ইউরোপ ফেরত যাত্রীদের সঙ্গে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার সনদ থাকলেও বাধ্যতামূলক নিজ খরচে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে- এমন খবরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা উদ্বিগ্ন ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে করোনা ভাইরাসের এ কঠিন সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। তারপরও যদি প্রবাসীদের দেশে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়, তা খুবই দুঃখজনক।

তিনি মনে করেন, এমন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে প্রবাসীরা বাংলাদেশে ফিরতে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।