মাগুরা: মাগুরায় আট বছর বয়সী আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় শনিবার (১৭ মে) ঘোষণা করা হবে।
দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করায় ভিকটিমের স্বজনদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
এ মামলায় অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য, আইনজীবী ও দেশবাসী।
আইনজীবীরা বলছেন, আসামিদের অপরাধ প্রমাণে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা আশাবাদী, আদালত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার বলেন, আমরা আদালতের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখছি। আছিয়ার মতো আর কোনো শিশু যাতে এমন নৃশংসতার শিকার না হয়, সেজন্য আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
মাগুরা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শম্পা বসু বলেন, আসিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ের মাধ্যমে যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিগত সময়ে এ ধরনের ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় দীর্ঘ সময়ে আদালতে রায়ের অপেক্ষায় থাকলেও এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় দ্রুত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সমাজ একটি নতুন বার্তা পাবে, যেখানে কোনো অপরাধী অপরাধ করলে তার শাস্তি পেতেই হবে, সে আজই হোক, বা কাল হোক।
সাক্ষ্যগ্রহণের মাত্র ১১ কার্যদিবসে শেষ হয়েছে মাগুরার শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রম। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১০টায় মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে মামলার শেষ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায় আগামী ১৭ মে ঘোষণার দিন ধার্য করেন বিচারক।
মাগুরা জেলা আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। দেশবাসীর নজর এখন আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে।
ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরা সদর উপজেলায়। শিশুটি বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুরের কাছে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু হয় আট বছরের শিশুটির। এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে হিটু শেখসহ চারজনের নামে মামলাটি করেন। পরে তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রমজানের ছুটিতে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে গত ৫ মার্চ রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। বোনের শ্বশুর হিটু শেখ মেয়েটিকে শুধু ধর্ষণই করেননি, হত্যারও চেষ্টা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় হিটু শেখকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন মেয়েটির মা।
ঘটনার পর শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে পাঠানো হয় ঢাকায়। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সে মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির মায়ের করা মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী সজীব শেখ (১৯), সজীব শেখের ছোট ভাই রাতুল শেখ (১৭) ও সজিবের মা জাহেদা বেগম (৪০), বাবা হিটু শেখকে (৪৭) আসামি করা হয়। তারা চারজনই বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এসআই