ঢাকা, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ মে ২০২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

৩৫৮ কোটি টাকায় কেনা লাগেজ ভ্যানে আয় মাসে ৭ লাখ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪৬, মে ২৫, ২০২৫
৩৫৮ কোটি টাকায় কেনা লাগেজ ভ্যানে আয় মাসে ৭ লাখ!

ব্যবসায়ীদের অনাগ্রহ ও কৃষকদের সাড়া না মেলায় কাজে আসছে না আমদানি করা রেলের লাগেজ ভ্যান। বর্তমানে এসব লাগেজ ভ্যানে রেলের দুষ্টচক্র যাত্রী পরিবহন করে টুপাইস কামিয়ে নিচ্ছে।

 

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসব লাগেজ ভ্যান বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়াসহ বিকল্প চিন্তা করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
  
সূত্র জানায়, নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে সৈয়দপুর হয়ে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী রুটে ৬টি যাত্রীবাহী আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। কম সময়ে স্বল্প খরচে উত্তরাঞ্চলের কৃষিসহ নানান পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ট্রেনগুলোয় লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা হয় দুই বছর আগে।  

এসব লাগেজ ভ্যান কিনতে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার চুক্তি হয় চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। সে সময় ৮ থেকে ৯ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিটি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের দাম পড়ে ৩ কোটি ৫ লাখ এবং প্রতিটি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের দাম ধরা হয় ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।  

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীন থেকে আমদানি করা হয় ১২৫টি লাগেজ ভ্যান। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের বহরে যুক্ত করা হয় এসব। এর মধ্যে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ। এর মধ্যে রয়েছে ২৮টি ফ্রিজিং লাগেজ। এর আগে পুরোনো লাগেজ ভ্যান ছিল ৫০টি, যার মধ্যে সচল ছিল ১৮টি।

নতুন এসব লাগেজ ভ্যান যুক্ত হওয়ার আগে গড়ে মাসে পার্সেল পরিবহনে রেলের আয় হতো ৭২ লাখ টাকা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে লাগেজ ভ্যানগুলো যুক্ত হওয়ার পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ রেলওয়ে ৩৫৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় করে গড়ে প্রতি মাসে আয় করছে মাত্র ৭ লাখ টাকা।

ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বলেন, ট্রাকে করে মালামাল পরিবহনে সৈয়দপুর থেকে ঢাকায় সবজি পাঠাতে প্রতি কেজিতে দুই থেকে আড়াই টাকা খরচ পড়ে। সেখানে ট্রেনে করে পাঠাতে খরচ সাড়ে ৫ টাকার মতো। এ ছাড়া ট্রেনে পরিবহন করলে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশন হয়ে গন্তব্যস্থানে পৌঁছাতে তিন-চারবার সবজি ওঠানো-নামানোতে পণ্য নষ্ট হয়। তাই আমরা ট্রাকেই সাধারণত পণ্য আনা-নেওয়া করি।

সূত্র জানায়, এসব লাগেজ ভ্যান ব্যবহার না হওয়ায় রেলের অসাধু কর্মচারীরা অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহন করে পকেট ভরছেন। অনেকে টিকিট না কেটে এসবে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এতে রেলওয়ের লাভ না হলেও তাদের পকেট ভরছে।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এ এম এম শাহনেওয়াজ বলেন, রেলে যে লাগেজ ভ্যান রয়েছে, তার মাত্র ৫ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে। তাই এখন এসব লাগেজ ভ্যানকে লাভজনক করতে পরিচালনার দায়িত্ব বেসরকারি খাতে দিতে চায় রেলওয়ে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।  

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।