লালমনিরহাট: উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে। বর্তমানে বিপৎসীমার মাত্র ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি।
এতে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ০৭ মিটার। যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৮ সেন্টিমিটার নিচে।
নদীপাড়ের মানুষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, কয়েক দিন ধরে উজানের ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে উজান থেকে ধেয়ে আসছে পানি। ফলে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি পানি। তবে এতে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে তিস্তা চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, ফসলের মাঠ। চরাঞ্চলের সড়ক পথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগের মাধ্যম হয়েছে নৌকা আর ভেলা। ডুবে যেতে বসেছে আমন ধানসহ নানা ফসলের ক্ষেত। পুকুর ডুবে যাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে চাষিদের মাছ।
লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার ওপর দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে যাওয়ায় নদীতে সামান্য পানি বাড়লে গোটা জেলার সব উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়। পানি বাড়লে নতুন নতুন এলাকা ডুবে যাবে। এবার তিস্তা নদীতে এখনও পর্যন্ত বড় কোনো বন্যা হয়নি। এটি বড় বন্যায় রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, উজান থেকে প্রচুর পানি আসছে। নিচু এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে। নিচু এলাকার পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তা ঘাট পানিতে ডুবে গেছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবরধন গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, দুদিন ধরে উজানের ঢলে তিস্তার পানি বাড়ছে। চরাঞ্চলের কিছু কিছু বাড়িতে উঠতে শুরু করেছে। যেভাবে পানি আসছে তাতে বড় বন্যা হওয়ার ভয়ে আছি।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, বন্যা হলেই কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, উজান থেকে পানি আসায় তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। সোমবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
এসআই