অব্যাহত বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রাঙামাটির নদীতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো ডুবে যেতে শুরু করে।
জানা গেছে, বাঘাইছড়ি উপজেলার কাচালং নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় রূপকারী ইউনিয়ন, মাস্টারপাড়া, মধ্যমপাড়া, হাজীপাড়া, মাদরাসাপাড়া, এফ ব্লক, বটতলী ও আমতলী ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার সংবাদকর্মী সালাউদ্দিন শাহীন জানান, বুধবার সকাল থেকে ওই উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে কাচালং নদীর পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। বর্তমানে বহু এলাকা পানিতে ডুবে গেছে এবং সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করতে।
লংগদু উপজেলার মাইনী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার ঝরনা টিলা, ভাসাইন্যাদম ইউনিয়ন, বগা চত্বর ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া, গুলশাখালী ইউনিয়নের সোনাগাঁও পাড়া, মাইনী ইউনিয়নের এফআইডিসি বড় কলোনি পানিতে তলিয়ে গেছে।
লংগদু উপজেলার সংবাদকর্মী গোলামুর রহমান জানান, বুধবার সকাল থেকে ওই উপজেলার বহু নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে এবং সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সঠিক তথ্য সংগ্রহে চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
বিলাইছড়ি উপজেলা সদর, ধূপ্পারছড়, বহলতলী, বাঙ্গালকাটা এলাকাসহ নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতেও কাপ্তাই হ্রদের পানি প্রবেশ করেছে।
বিলাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. ইসহাক বলেন, উপজেলা সদরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকেছে। পানি বাড়ার গতি যেভাবে চলছে, যেকোনো মুহূর্তে পুরো উপজেলা পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।
এছাড়া রাঙামাটি সদর, বরকল, নানিয়ারচর ও জুরাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এসব এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা নৌকাযোগে চলাচল করছেন।
বর্তমানে জেলার কয়েকটি উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রাঙামাটির স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মোবারক হোসেন বলেন, ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—যেখানে পানি ঢুকছে, সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং ত্রাণ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। তবু আমরা সার্বিক যোগাযোগ রাখছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সবরকম প্রস্তুতি রেখেছি।
এসআরএস