নীলফামারী: ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল এবং ভারতের গজলডোবা ব্যারাজ থেকে পানি ছাড়ার প্রভাবে তিস্তা নদী বাংলাদেশ অংশে আবারও ফুঁসে উঠেছে। এতে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, বুধবার একই সময়ে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টায় তা কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে নেমে আসে। তবে পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় পানি আবারও বেড়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা অববাহিকার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পানি বেড়ে তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চর গ্রামগুলোতে হাঁটু সমান পানি ঢুকে পড়েছে। এর ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু স্থানে সরে যাচ্ছেন।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে আছি, পানি ক্রমেই বাড়ছে। ’
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান জানান, ঝাড়সিংহেশ্বর তিস্তা অববাহিকার সবচেয়ে বড় চর গ্রাম। বন্যার পানিতে চরাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বর্তমানে দেড় হাজার পরিবার বন্যাকবলিত। ডিমলার বিভিন্ন চরের মানুষও পানিবন্দি হয়ে আছেন।
টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, তিস্তার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
তিস্তা ব্যারাজের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে পানির প্রবাহ বাড়ছে এবং তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসন নদীপারের মানুষকে নিরাপদ স্থানে থাকতে এবং সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি নদীতীরবর্তী এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
আরএইচ