দুই সন্তানের বাবা ও হ্যাকার চক্রের হোতা পলাশ রানাকে (২৫) জাল জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে শিশু দেখিয়ে জামিন আদায়ের ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেফাউল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) জেলা শিশু আদালতের বিচারক আদালতের পেশকারকে মামলার নির্দেশ দেন।
রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুল ইসলাম তালুকদার বলেন, লিখিত এজাহার হাতে পেয়েছি। কিছু সংযোজন-বিয়োজনের জন্য বাদীকে বলা হয়েছে। সংশোধিত কপি হাতে পেলেই মামলা রুজু করা হবে।
পেশকার সালাহউদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছেন। বর্তমানে সেটি মামলা হিসেবে রুজুর প্রক্রিয়াধীন।
তবে অভিযুক্ত আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলা হলে সেটি আদালতে মোকাবিলা করব।
এর আগে গত ১৫ জুলাই ভোরে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে গোবিন্দগঞ্জের তালুককানুপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে হ্যাকার চক্রের হোতা পলাশ রানা ও তার সহযোগী সুমন মিয়া, সাইদুল ইসলাম এবং আবু সাইদ লিটনকে আটক করা হয়। এ সময় বিপুল পরিমাণ সিমকার্ড, মোবাইল ও প্রযুক্তি ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। সরকারি ভাতা হ্যাক করে লাখো টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
পলাশ রানার জামিন চেষ্টায় প্রথমে ব্যর্থ হলে আইনজীবী রিপন গত ২৭ জুলাই দায়রা জজ আদালতে মিস কেস করেন। কিন্তু মামলার তথ্য গোপন রেখে ৩ আগস্ট শিশু আদালতে ভুয়া জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে পলাশকে ১৭ বছর ৭ মাস বয়সী দেখান। আদালত তখন জামিন মঞ্জুর করলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে ১২ আগস্ট দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী সরওয়ার হোসেন বাবুল বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি জানান, ৪ আগস্ট ইস্যুকৃত জন্মনিবন্ধনে জন্মতারিখ দেখানো হয় ১৫ জানুয়ারি ২০০৮। অথচ জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ ১ জুন ২০০০— যা অনুযায়ী বয়স ২৫ বছর ২ মাস। মামলার এজাহারেও পলাশের বয়স ২৫ বছর উল্লেখ রয়েছে।
এর আগে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু বকর সিদ্দিক ছানা জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশে ওই জামিন বাতিল করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
এমজে