ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

বসুন্ধরা শুভসংঘ

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী ২৯ হাজার পরিবার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩১, অক্টোবর ১৫, ২০২৫
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী ২৯ হাজার পরিবার

দিতে হয় না সুদ কিংবা সার্ভিস চার্জ, এমনকি লাগছে না কোনো জামানতও, তবুও দেওয়া হচ্ছে ঋণ। এই ঋণ পেয়েই প্রায় দুই দশক ধরে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক উদ্যোগে ভাগ্য বদলেছে হাজারো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের।

এরই ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্রাঞ্চারামপুরে তিনশ বত্রিশ জন সুবিধাবঞ্চিত নারীর মাঝে বিতরণ করা হলো ৬০ লক্ষ টাকার ঋণ। আর এই সহজ শর্তের ঋণ পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুর, নবীনগরসহ কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ২৯ হাজারের বেশি দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের জীবনে এসেছে সচ্ছলতা।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) জগন্নাথপুর আধুনিক অডিটোরিয়ামে বাঞ্ছারামপুরের ৩৩২ জন অসহায় নারীর হাতে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ তুলে দেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ইমদাদুল হক মিলন ও ময়নাল হোসেন চৌধুরী। ঋণ নিতে আসা এই নারীদের প্রত্যেকের উপর নির্ভর করছে একটি করে পরিবার। নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন থাকলেও আর্থিক অসচ্ছলতা বারবার তাদের পথ আটকে দিচ্ছিল। ঠিক সেই সময়টাতে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ পরিচালিত বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৬০ লক্ষ টাকার ঋণ সহায়তা।

এখানকার অনেক দরিদ্র নারী উদ্যোক্তাই এর আগে বিভিন্ন মাধ্যমে চড়া সুদে ঋণের ফাঁদে পরে হয়েছেন নিঃস্ব। আর সেখানে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ-সার্ভিস চার্জমুক্ত এই ঋণ সহায়তায় জীবন পাল্টে গেছে তাদের।

২০০৫ সাল থেকে পরিচালিত সুদমুক্ত জামানতবিহীন এই ঋণ প্রকল্পের জন্য শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুরই নয়, নবীনগর ও কুমিল্লার হোমনারও হাজার হাজার পরিবার হয়েছে স্বাবলম্বী।

ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত এমন ঋণ প্রকল্প পরিচালনা করে বসুন্ধরা গ্রুপ একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

আজকে তৃতীয় বারের মতো ঋণ নিতে এসেছেন ২০৪ জন। সাড়ে চার থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত আপনারা আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। এর মধ্যে প্রায় সবাই নানা কাজে এই টাকা ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা চাই যারা ঋণ নিচ্ছেন তারা এই টাকার সঠিক ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হবেন। আপনারা স্বাবলম্বী হলেই আমরা সার্থক। এমনভাবে নিজেদের গঠন করবেন যেন আর কখনো ঋণ নিতে না হয়। যারা আজকে প্রথমবারের মতো ঋণ নিচ্ছেন, আপনারা আমাদের আইনগুলো মেনে চলবেন। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন থেকে ঋণ নিয়ে এই টাকা কেউ অন্যায় কোনো কাজে ব্যবহার করবেন না। নিজে কষ্ট করে আয় করবেন, স্বাবলম্বী হবেন। মাদক সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে ব্যবহার করবেন না। এই যে এতগুলো বছর ধরে আমরা ঋণ বিতরণ করছি, আমাদের আদায়ের হার শতভাগ। আপনাদের সকলের উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করি।  

ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যানের সহায়তায় আজ থেকে ২০ বছর আগে এই কর্মসূচি চালু হয়েছে। এইটা একটা মডেল কর্মসূচি। এর মাধ্যমে আপনারা স্বাবলম্বী হবেন। আপনাদের দেখে অন্যরাও নিজেদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আপনারা ঋণ গ্রহণ করছেন আপনাদের সেই উদ্দেশ্য যেনো সফল হয়। ২০০৫ সাল থেকে পরিচালিত সুদমুক্ত জামানতবিহীন এই ঋণ প্রকল্পের জন্য শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর নয়, নবীনগর ও কুমিল্লার হোমনারও হাজার হাজার পরিবার হয়েছে স্বাবলম্বী। সুদ-সার্ভিস চার্জ মুক্ত ও জামানতবিহীন এ ধরনের ঋণ দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

স্থানীয়রা জানান, শুধু ঋণই নয়, শিক্ষাবৃত্তি, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, প্রশিক্ষণসহ সেলাই মেশিন বিতরণ এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অনুদানের মাধ্যমেও বসুন্ধরা গ্রুপ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এই সুদমুক্ত ঋণ কার্যক্রম শুধু আর্থিক সচ্ছলতাই আনছে না, গ্রামীণ নারীদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধিতেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চড়া সুদের ফাঁদ থেকে মুক্তি পেয়ে আজ নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে এই অসচ্ছল নারীরা। যার ফলে বদলে যাচ্ছে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্রও।

ক্ষুদ্র ঋণ পেয়ে পারুল বেগম বলেন, এই ঋণ নিয়ে অনেক উপকার পেয়েছি। এইবার টাকা নিয়ে ছেলের পাসপোর্ট করবো। সেলাই মেশিন কিনেছি আগেরবার। সেলাই কাজ করে মেয়েদের পড়িয়েছি। টাকা জমিয়েছি। এখন পাসপোর্ট করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাবো। আমার যে বসুন্ধরার ঋণ নিয়ে কত উপকার হইছে তা বলে বোঝাতে পারবো না।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বসুন্ধরা শুভসংঘ এর সর্বশেষ