ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

শেখ জামাল নাকি মুক্তিযোদ্ধা?

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫
শেখ জামাল নাকি মুক্তিযোদ্ধা? ছবি: শোয়েব মিথুন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চলমান ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবারো মুখোমুখি হচ্ছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল দুটি। গতবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র।

তাই প্রতিশোধের সুযোগ এখন 'ড্রিম টিম' খ্যাত মুক্তিযোদ্ধার সামনে।

ওদিকে ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা পাঁচবার ফাইনাল খেলা শেখ জামাল টুর্নামেন্টের শিরোপার অন্যতম যোগ্য দাবিদার। ম্যাচটি তাদের জন্য শিরোপা ধরে রাখার লড়াই। তবে দুই দলের মূল কথা একটিই, মৌসুমের প্রথম শিরোপার স্বাদ নেয়া।
        
ফাইনাল উপলক্ষে আজ বুধবার বাফুফে ভবনে ম্যাচ পূর্ব এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শেখ জামালের কোচ মারুফুল হক, অধিনায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধার ম্যানেজার ফিরোজ মাহমুদ হোসেন টিটু, কোচ আবু ইউসুফ, মুক্তির অধিনায়ক এনামুল হক আর বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ।

সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালের কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘দলের সব খেলোয়াড় সুস্থ এবং ফিট আছে। দলে কোন ইনজুরি সমস্যা নেই। আমরা শিরোপা ধরে রাখবো বলে আশা রাখি। ’

মুক্তিযোদ্ধা যে ছাড় দিতে প্রস্তুত নয় তা ভালো করেই জানেন জামালের কোচ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ভালো খেলেই ফাইনালে এসেছে। তারা আবাহনী-মোহামেডানের মতো দলকে হারিয়েছে। ফাইনাল ম্যাচে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা যদি আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারি তাহলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব। ’

দলীয় অধিনায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরীও শিরোপা ধরে রাখতে প্রত্যয়ী। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন নতুন মৌসুমে অনুশীলন শুরু করি তখনই একটা টার্গেট ঠিক করেছিলাম। আমরা সব টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলতে চাই। ইতোমধ্যেই ভুটানের কিংস কাপের শিরোপা জিতেছি। এখন ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতে মৌসুমের শুরু করতে চাই। ’

মুক্তিযোদ্ধার ম্যানেজার ফিরোজ মাহমুদ হোসেন টিটু বলেন, 'ফাইনালের ম্যাচ নিয়ে আমি ভীত। প্রতিপক্ষ শেখ জামাল বলে নয়। আমি ভীত দুর্বল রেফারিং হবে এই আশঙ্কায়। খেলায় জয়-পরাজয় থাকবেই। তবে জামাল নিঃসন্দেহে ভাল দল। তবে শক্তিমত্তায় আমরাও পিছিয়ে নেই। এ টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্যায় থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত যতগুলো ম্যাচ খেলেছি, লক্ষ্য করলে দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচেই রেফারিং ছিল যথেষ্ট ক্রুটিপূর্ণ, এটা দুঃখজনক। '

মুক্তিযোদ্ধার কোচ আবু ইউসুফ ফাইনাল ম্যাচ সম্পর্কে বলেন, 'পরীক্ষিত দল হিসেবেই আমরা এ পর্যন্ত এসেছি। দলের খেলোয়াড়দের যেভাবে দিক-নির্দেশনা দিয়েছি, তারা সেভাবেই খেলার চেষ্টা করেছে। জামাল অবশ্যই ভাল দল, তাতে কোন সন্দেহ নেই। মুক্তিযোদ্ধা-জামাল এই দুই দলের মধ্যে ফাইনাল ম্যাচে পার্থক্য রচিত হবে কোন দল কেমন কৌশল প্রয়োগ করে সফল হয়, তার উপর। ’

আর মুক্তিযোদ্ধার অধিনায়ক এনামুল হক বলেন, 'আমরা সবসময়ই একতাবদ্ধ, লড়াকু দল এবং ভাল কিছু করার চেষ্টা করি। এবার আবাহনী-মোহামেডানের মতো দলকে হারিয়েছি। জামালকে আমরা ভয় পাই না, তবে সমীহ করি। রেফারিং যেন ফাইনালে নিরপেক্ষ হয়, সেই আশাই করি। আর সেটা হলে ইনশাল্লাহ্ আমরাই চ্যাম্পিয়ন হবো। '

ফেডারেশন কাপের ইতিহাসে এ নিয়ে টানা ৫ বার ফাইনালে উঠার রেকর্ড গড়লো শেখ জামাল। এর আগে ২০১০, ১১, ১২ ও ১৩ সালে ফাইনাল খেলে দলটি। চ্যাম্পিয়ন হয় ২০১১ ও ১৩ সালে। এমন রেকর্ড একমাত্র ঢাকা আবাহনীরই আছে।

চলমান আসরে 'এ' গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ আটে নাম লেখায় জামাল। ২ খেলায় তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। গ্রুপে তারা হারায় ফেনী সকার ক্লাবকে ৪-১ এবং টিম বিজেএমসিকে ৭-০ গোলে। এই স্কোর এ আসরের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। কোয়ার্টারে ব্রাদার্সকে টাইব্রেকারে হারায় ৫-৪ (২-২) গোলে। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি ১৫ গোল জামালের দখলে। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ৪ গোল। আর সেমিতে শেখ রাসেলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে শেখ জামাল।

পক্ষান্তরে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। তারা ২ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ আটে উন্নীত হয়। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে তারা ৪-০ গোলে উত্তর বারিধারাকে হারালেও পরের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে। শেখ রাসেলেরও তাদের সমান পয়েন্ট ছিল। কিন্তু এক গোল বেশি করায় রাসেলই হয়ে যায় গ্রুপসেরা। কোয়ার্টারে মুক্তিযোদ্ধা ১-০ গোলে হারায় অপর ফেভারিট ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে। আর সেমিতে ঐতিহ্যবাহী মোহামডোনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে মুক্তিযোদ্ধা।

উল্লেখ্য, ফাইনাল ম্যাচের গ্যালারি টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। আর ভিআইপি টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা।

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল ৫.১৫ মিনিটে। সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি ওয়ার্ল্ড।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘন্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।