ঢাকা: মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্ব শেষে পরিস্কার বোঝাই যাচ্ছে ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্ব হবে অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ। কারণ শীর্ষে থাকা শেখ জামালের (২৩ পয়েন্ট) ঘাড়ে শ্বাস ফেলছে তারুণ্য নির্ভর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান (২০ পয়েন্ট)।
তবে সমান ২০ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে আছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও শেখ রাসেল। আর যদি মোহামেডান একটি ম্যাচে পরাজিত হয় তাহলে তাকে টপকে যাবে ব্রাদার্স-রাসেলও। আর ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তাদের এক ধাপ নিচে পঞ্চম অবস্থানে মুক্তিযোদ্ধা। ১৭ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে ঢাকা আবাহনী। তাই একটি জমজমাট লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে পয়েন্ট টেবিলে দলগুলোর অবস্থানের দিকে তাকালেই।

প্রথম পর্ব শেষে লিগের শীর্ষে থাকা শেখ জামালের কোচ মারুফুল হকসহ সকল কোচিং স্টাফ বরখাস্ত! তাই দ্বিতীয় পর্বে নতুন কোচ আর ফরোয়ার্ডের অপেক্ষোয় জামাল। গত ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট হারিয়েছে দলটি।
লিগের সেরা চমক তারুণ্য নির্ভর মোহামেডান। জসিম উদ্দিন জোসীর অধীনে দলটি ১০ ম্যাচে অসাধারণ খেলেছে। ইসমাইল বাঙ্গুরা(৮), তৌহিদুল আলম সবুজ(৪), জুয়েল রানা(৩) ও মো: ইব্রাহিম(৩) সবাই গোল করে দলটির সামর্থের পরিচয় দিয়েছে। দ্বিতীয় পর্বেও সেরা চমক হতে পারে দলটি।
তবে খুব ধীরে হলেও বেশ এগিয়েছে গোপীবাগের দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কোচ সৈয়দ নাইমুদ্দিনের তুরুপের তাস ফরোয়ার্ড হাইতিয়ান অগাস্টিন ওয়ালসন। ১০ ম্যাচে তার গোল ১১টি। রক্ষণাত্বক নীতিতে খেলা দলটি দ্বিতীয় পর্বেও লড়বে এটি নিশ্চিত। ১০ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ২০ পয়েন্ট। মোহামেডানের সাথে তাদের পয়েণ্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে দলটি।

চতুর্থ স্থানে রয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। অষ্ট্রিয়ান কোচ দ্রাগান দুকানোভিচের অধীনে দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দলটি ভালোই খেলছে। কিন্তু ইনজুরি সমস্যা দলটিকে বেশ ভুগিয়েছে লিগের প্রথম পর্বে। দলের পক্ষে দেশসেরা অন্যতম ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি ৫ গোল আর পল এমিল ৪ গোল করেছেন। ১০ ম্যাচে মোহামেডান ও ব্রাদার্সের সাথে তাদেরও সমান পয়েন্ট ২০। তবে গোল ব্যবধানের কারণে তারা পিছিয়ে গেছে পয়েন্ট টেবিলে।
তবে অল রেডস খ্যাত মুক্তিযোদ্ধায় চলছে এনামুল হকের একক প্রদর্শনী! ১০ ম্যাচে ৯ গোল করে তিনি লিগে দেশীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা। এছাড়া দলটির হয়ে ৪ গোল করেছেন আরেক বিদেশি ফরোয়ার্ড কামারা সার্বা। দলটির বর্তমান অবস্থান পঞ্চম। ১০ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ১৯।
প্রথম পর্বের শুরু থেকেই বাজে খেলে তালিকার ষষ্ঠ অবস্থানে আছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আবাহনী। চোট সমস্যায় জর্জরিত দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়রা। দলটির ১৩ গোলের ৮টি করা হাঙ্গেরিয়ান জাবলেস চরবা চোট সমস্যার কারণে দেশে ফিরে গেছেন। তাই জর্জ কোটনের শিষ্যদের সামনে ঘোরতর বিপদ, একজন ভালো মানের ফরোয়ার্ডের বিকল্প নেই দলটির সামনে।

প্রথম পর্ব শেষে তলানির পাঁচ দল রেলিগেশন আতঙ্ক মুক্ত নয়। রহমতগঞ্জ (৯), টিম বিজেএমসি (৮), সকার ক্লাব (৮), চট্টগ্রাম আবাহনী (৫) ও ফরাশগঞ্জের মধ্যে (৫) অবনমন ঠেকানোর লড়াইটাও জমবে বেশ।
এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্বে কে হাসবে শেষ হাসি? বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জামাল নাকি তাদের হটিয়ে সিংহাসন দখল করবে অন্য কোন দল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ২৫ মে ২০১৫
ইয়া/এমআর