ঢাকা: বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে আগামী ১১ জুন কিরগিজস্তান ও ১৬ জুন তাজিকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। দেশের মাটিতে খেলা প্রতিপক্ষ যতই শক্তিশালী হোক একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচ দেখতে মুখিয়ে আছে সবাই।
'শেষ সময়ের গোলে বাংলাদেশের সর্বনাশ', 'ড্র করেই মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ', 'ভালো খেলেও পরাজিত বাংলাদেশ'-শিরোনামের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে ম্যাচ শেষে আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়ছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। কিন্তু কেন?
কারণ প্রায় প্রতিটি ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে থেকেও হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। একটি গোল দিয়েই পুরো দলটি রক্ষণাত্মক নীতিতে খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তারপর শেষ সময়ের গোলে বাংলাদেশের সর্বনাশ...

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপসহ সর্বশেষ অনুষ্ঠিত দুটি প্রীতি ম্যাচে ব্যবধান বাড়াতে পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা। বাংলাদেশ ফুটবল দলের ফরোয়ার্ড বলতেই প্রথমে আসে জাহিদ হাসান এমিলির নাম। কিন্তু গত ১৫ ম্যাচে লাল-সবুজ জার্সিতে এমিলির গোল মাত্র ৫টি। আর চলমান পেশাদার লিগেও গোল ৫টি। সর্বশেষ দুটি প্রীতি ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গোল পাননি এমিলি। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র গোলদাতা তিনিই।
চলতি মৌসুমে ফেডারেশন কাপ (৫) ও চলমান লিগ (৯) সহ মোট ১৫ গোলের মালিক এনামুল হক। গত দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে গোলের দেখা পাননি এনামুল হক। তবে আশাটা একদমই ফুরিয়ে যায়নি। ক্রুইফের অধীনে এই প্রথম খেলছেন এনামুল। খেলছেন খানিকটা ভিন্ন আঙ্গিকে। তাই আশা করা যাচ্ছে তার পায়ের কারুকাজে হয়তো গোলের দেখা পাবে বাংলাদেশ।
তবে বেশ বাজে সময় যাচ্ছে আরেক ফরোয়ার্ড ওয়াহেদ আহমেদের। আকাশী-নীল জার্সি গায়ে লিগের ম্যাচগুলোতে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ ওয়াহেদ। চলমান লিগে তার গোল মাত্র দুটি! দুটি প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন। তবে গোলের দেখা পাননি।
আক্রমণভাগের খেলোয়াড় আবুল বাতেন মজুমদারকে শুধু 'ফরোয়ার্ড' বললে ভুল হবে। লিগের ম্যাচগুলোতে পুরো মাঠ চষে বেড়ান এ ফুটবলার। ফরোয়ার্ড লাইনসহ আবাহনীর কোচ জর্জ কোটনের ইশারায় চষে বেড়ান পুরো মাঠ। লিগে তার গোল ১টি। সামনের ম্যাচ গুলোতে সবাইকে চমকে দিয়ে গোল করলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

ওদিকে দলে ঠাঁই পাওয়া মোহামেডানের হয়ে খেলা জুয়েল রানা (৩ গোল) ও তৌহিদুল আলম সবুজের (৪ গোল) বৃহস্পতি বেশ তুঙ্গে। লিগে তারা দুজনই মাঠ কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। দলের বিপদে গোলও করছেন। ক্রুইফ এ দু'জনকে প্রীতি ম্যাচে খেলিয়েছেন। তবে গোলের দেখা পাননি তারা।
আর পেশাদার লিগে ভালো খেলে দলে স্থান করে নেওয়া আমিনুর রহমান সজীব, রুবেল মিয়ার এখনও মাঠে নামা হয়নি। তবে লিগে তারা দারুণ ক্রীড়া নৈপুন্য দেখিয়েছেন।
জাতীয় দলে ঠাঁই পেলেও গত দুই ম্যাচে এখনও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি আরেক ফরোয়ার্ড তকলিস আহমেদের। উদীয়মান এই খেলোয়াড় পেশাদার লিগেও তেমন কোন সাফল্য পাননি। কারণ শেখ জামালের হয়ে খেলা এ ফুটবলার বিদেশী ফরোয়ার্ডদের ভিড়ে সাইড বেঞ্চে বসেই সময় পার করছেন। তাই লিগে একটিও গোলের দেখা পাননি তিনি।

দলীয় অধিনায়ক মামুনুলের মতে, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য নয়, এটি আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
আশায় রয়েছে দেশের কোটি ফুটবল প্রেমী, অভ্যাস পরিবর্তন হবে ফুটবলারদের। দলের ফরোয়ার্ডরা মাঠে গোল করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। আর জয়ের আনন্দে মেতে উঠবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, ০৫ জুন ২০১৫
ইয়া/এমআর