ঢাকা: ০, ২, ৬, ৫, ২, ৯- মুমিনুল হকের শেষ ছয় ইনিংসের রান। দেখতে খারাপ লাগছে? তার আউট হওয়ার ধরণ দেখলে সেটা নিশ্চয়ই আরও বাড়বে।
আজও যেমন, আভিস্কা ফার্নান্দোর বলটা খেলবেন কি-না বুঝেই উঠতে পারলেন না; শেষ মুহূর্তে ব্যাটটা চালালেন ঠিকই, কিন্তু গন্তব্য হলো উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকভেলার হাত। কী করবেন মুমিনুল বুঝে উঠতে পারেননি অনেকবারই। বেশির ভাগ সময় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন।
ছন্দে যে একেবারেই নেই, স্পষ্ট হয়ে উঠছে তার আউট হওয়ার ধরনে। সঙ্গে অধিনায়কত্বের মানসিক চাপ তো আছেই, মুমিনুল তা যতই অস্বীকার করুন। তিনি যদি চাপ অনুভব নাও করেন, দল তার কারণে চাপে পড়ছে। সর্বশেষ ১৪ ইনিংসের ১১টিতেই আউট হয়েছেন সিঙ্গেল ডিজেটে, শেষ ছয় ইনিংসে একবারও যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে।
মুমিনুল নিজে ফর্মে না থেকেও টানা খেলে যাচ্ছেন। মানসিকভাবে দলকে চাঙা করতে পারছেন না, উল্টো নানা মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠছে। এদিকে বেঞ্চে বসে থাকে ইয়াসির আলি রাব্বি হয়তো নিজেও বুঝতে পারছেন না কেন তিনি একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না। ফর্মে থাকা লিটনকেও নামতে হচ্ছে সাত নম্বরে। অথচ তিনিই এখন দলের সেরা ব্যাটসম্যান।
এতকিছুর পরও সংবাদ সম্মেলনে এসে মুমিনুল কখনো বলছেন, 'অফ ফর্মে নেই'; আবার কখনো বলছেন, 'আমার ব্যাটিং নিয়ে এত চিন্তিত না'। তিনি না হয় মানসিকভাবে নির্ভার থাকতে এমন বলছেন। কিন্তু কোচের ভাবনাটা কী? ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনশেষে জানতে চাওয়া হলো রাসেল ডমিঙ্গোর কাছে।
আপনার ভাবনাটা কী, মুমিনুল কি অফ ফর্মে আছেন? জবাবে প্রোটিয়া কোচ বললেন, 'আমি মনে করি না সে ফর্মহীনতায় আছে। সে শুধু রান পাচ্ছে না। আমি যখন তাকে নেটে দেখি খুব ভালো মনে হয়। আজকে সকালেও এমন দেখেছি। তার পজিশন আসলেই ভালো। সে রান পাচ্ছে না, কিন্তু অফ ফর্মে নেই। '
এরপরই তিনি ধরিয়ে দিলেন মুমিনুলের ইতিহাস, কবে কত রেকর্ড গড়েছেন, শোনালেন সেসব, 'তার অনেক ভালো রেকর্ড রয়েছে। ৫১ ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি রয়েছে। মুশফিক তার নবম সেঞ্চুরি পেয়েছে ৮২ ম্যাচে। মুমিনুল জানে কীভাবে রান করতে হয়। সব খেলোয়াড়েরই খারাপ সময় যায়। কোচ হিসেবে এ সময় সমর্থন দেওয়া উচিত যে আত্মবিশ্বাস হারায়। '
'চার টেস্ট আগেই সে অবিশ্বাস্য ৮০ রান করেছে নিউজিল্যান্ডে। এটা খেলাকে সেট করেছে যেটি আমরা জিতেছি। এটা অনেক দিন আগের নয়। সব খেলোয়াড় প্রত্যেক খেলায় রান পায় না। যে কোনো সময় বড় স্কোর করতে পারে। '
ডমিঙ্গোর কথায় স্পষ্ট, তিনি শিষ্যকে সমর্থন দিতে চাচ্ছেন। সেটা তিনি দিতে পারেন, দেওয়াটা জরুরিও। বাইরে বলার জন্য হলে ঠিক আছে, কিন্তু ভেতরেও যদি মুমিনুল অথবা ডমিঙ্গো বিশ্বাস করেন, তিনি অফ ফর্মে নেই; তাহলে দল ও অধিনায়ক দুজনের জন্যই ক্ষতির। প্রশ্নটাও তখন চলে আসবে অবধারিতভাবে- ছয় ইনিংস যিনি দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি, তার অফ ফর্ম কবে আসবে?
>>> আরও পড়ুন: মুশফিক-লিটনকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৮ ঘণ্টা, ২৩ মে, ২০২২
এমএইচবি/এমএমজেড