কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ছিলেন পর্যটক এবং একজন ছিলেন কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'ইন্ডিয়া টুডে'র খবরে বলা হয়েছে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার “আইনি অনুরোধে” পাকিস্তানি তারকাদের সামাজিক মাধ্যমে থাকা উপস্থিতি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বাবর আজম, উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং গতিময় বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ভারতের অভ্যন্তরে আর প্রবেশযোগ্য নয়।
ভারতীয় ব্যবহারকারীরা এই অ্যাকাউন্টগুলো দেখতে গিয়ে নিচের বার্তাটি পাচ্ছেন, “এই অ্যাকাউন্টটি ভারতে উপলভ্য নয়। একটি আইনি অনুরোধ অনুযায়ী এই সামগ্রী সীমিত করা হয়েছে। ”
হামলার নেপথ্যে সন্দেহভাজন লস্কর-ই-তইয়্যেবা
কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত হামলায় জড়িত সন্দেহে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তইয়্যেবা’র নেতা হাফিজ সাঈদকে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে, লস্করের কমান্ডার ফারুক আহমদের নেটওয়ার্ক এই হামলায় বড় ভূমিকা রেখেছে।
এই হামলার পর থেকেই ভারত সরকার পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা ভারতের ভেতরে বিপুল অনুসারী নিয়ে সক্রিয় ছিলেন, তাদের অ্যাকাউন্ট সীমিত করা হয়েছে।
ক্রিকেটার ও ক্রীড়াবিদদের অ্যাকাউন্টেও বিধিনিষেধ
বাবর আজম (পেশোয়ার জালমি), শাহিন আফ্রিদি (লাহোর কালান্দার্স) এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান (মুলতান সুলতানস) বর্তমানে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলছেন। ২০২৩ সালের পুরুষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নিতে এই খেলোয়াড়রা ভারত সফরও করেছিলেন।
এই ঘটনার আগে পাকিস্তানের জ্যাভলিন থ্রো তারকা আরশাদ নাদিমের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্যারিস অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী এই অ্যাথলেটকে ভারতের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন নীরজ চোপড়া বেঙ্গালুরুতে ২৪ মে আয়োজিত "এনসি ক্লাসিক" প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে আরশাদ জানান, এশিয়ান অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতির কারণে তিনি অংশ নিতে পারবেন না।
ইউটিউবেও নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ
শুধু ইনস্টাগ্রাম নয়—ভারতে সীমিত করা হয়েছে শোয়েব আখতার, বাসিত আলী এবং শহীদ আফ্রিদির মতো সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ইউটিউব চ্যানেলও। সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, এসব চ্যানেল থেকে "উসকানিমূলক, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন, ভারত ও এর সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে। "
এমএইচএম