ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাই আসল

সৈয়দ ইফতেখার আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাই আসল তামিম, সাকিব, মুশফিকুর রহিম, রিয়াদ ও নাসির

ঢাকা: সেই ১৯৯৯ বিশ্বকাপ থেকে একটা ‘বচন’ বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম ও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। যার রেশ বরং কমেইনি, বড়েছে বহুগুণে।

২০১৫ সালে এসে ১১তম ক্রিকেট বিশ্বকাপে ১৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বাংলাদেশ দল আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে সেই প্রশ্ন পাইপ লাইন থেকে আরও এগিয়ে এসেছে। আর সেটি হচ্ছে ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা। ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাই বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে মত ক্রিকেট বিশ্লেষকদের।

সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে কনসিসটেন্ট হতে হবে। ’

তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ২৪৫ করেছিলাম। তবে বাকি তিনটি ম্যাচে সে ধারা ধরে রাখতে পারিনি। বিশেষ করে নন-টেস্ট প্লেয়িং টিম আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে আরমা অনেক কম রান করেছি। ২৪৫ এর পরেই আবার ২০০’র নিচে রান মেনে নেওয়াটা কষ্টকর।

আতাহার আলী খান বাংলানিউজকে আরও বলেন, টপ অর্ডারে আমাদের রান করতেই হবে। তামিম, আনামুল বিজয়, সাকিব, মুশফিক এই চার জনের সবাইকেই যার যার দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। ধারাবাহিক একটা খেলা খেলে যেতে হবে। এছাড়া চার নম্বরে নামা ইনফর্ম মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও লেট অর্ডারে নাসিরকেও ধারাবাহিক থাকতেই হচ্ছে। নয় তো ভালো কিছু আশা করা সো ডিফিকাল্ট। ম্যাচ বাই ম্যাচে আমরা যদি ২৪০ থেকে ২৫০ ধারাবাহিকভাবে না করতে পারি তবে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর চেয়ে কম রান নিয়ে বোলারা ম্যাচ জয়ে সাধারণত তেমন কিছু করতে পারবেন না।

ওপেনিংয়ে তামিমকে ধারাবাহিক হতে হবে। জুটি বেঁধে ক্রিজে টিকে থাকতে হবে কম করে ১৫ ওভার পর্যন্ত। তামিমের হাত ধরে প্রথমে ভালো সূচনা করতে হবে। আর মধ্যম ইনিংসগুলোকে বড় ইনিংসে পরিণত করতে হবে। ইতোপূর্ব দেখা গেছে তরুণ আনামুল বিজয় খেলতে পারেন চাপ মুক্ত হয়ে। তাকে সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সেই সঙ্গে হতে হবে বাউন্স ও দ্রুত গতির উইকেটের সঙ্গে কৌশলিও।

মোমিনুল হককে নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব নিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি আসলেই ভালো ব্যাটসম্যান। কক্সবাজারের এই ক্লাসি ক্রিকেটারকে ধারাবাহিক রান করে নিজেকে আরও উজ্জ্বল অবস্থানে নিতে হবে। আর এটি তিনি ভালো করেই জানেন যে বিশ্বকাপ মঞ্চ তার জন্য একটি বড় সুযোগ।

মিডিল অর্ডারে সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ঢেলে দিতে হবে তার জীবনের সমগ্র অভিজ্ঞতা। এবারের বিশ্বকাপে সেরাদের সেরা, তারুণ্য, অভিজ্ঞ এবং ক্রিকেটের পিক এজে থাকা সাকিবকে কিছু একটা করে দেখাতেই হবে। স্মরণীয় করতে হবে বিশ্বকাপ। নয়তো ইতোমধ্যেই সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারে ভূষিত সাকিবের বিশ্বকাপ জীবনে তেমন অর্জনের উপলক্ষ আর কবে ফর্ম তুঙ্গে হিসেবে পান তা নিজেও ভালো বোঝেন সাকিব।

ফর্মে রয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রান করছেন নিয়মিত। প্রস্তুতির সব ম্যাচে রান করেছেন। এটা দলের জন্য খুবই ভালো। যে কোনো পজিসনে ব্যাটিং করার সামর্থ্য রয়েছে রিয়াদের। এটা যে কোনো দলের জন্য প্লাস পয়েন্ট। এখন তিনি চার নম্বরে খেলছেন। তার লম্বা ইনিংস খেলার ক্ষমতা রয়েছে। সিঙ্গেলে খেলায় ভীষণ পারদর্শী তিনি। তবে মারকুটেও হতে পারেন। সর্বপরি টেকিনকও বেশ। হয় তো এবার ব্যাটিয়ে টপ-অর্ডারের সঙ্গে মিডিল-অর্ডারের মূল সেতুবন্ধন গড়ে রিয়াদই হতে পারেন বাংলাদেশ দলের ট্রাম্প কার্ড।

বাংলাদেশ দলের প্রধান ব্যাটসম্যান বলা হয় মুশফিকুর রহিমকে। আসলেই যে তিনি দলের প্রধান ব্যাটসম্যান তা প্রমাণের এর চেয়ে বড় মওকা আর হয় না, হয় তো মুশফিকও সে জন্যই মুখিয়ে আছেন। দলের জয়ে কিছু একটা মুশফিক করবেনই, এই আত্মবিশ্বাস দেশের ১৬ কোটি মানুষের।

দলে ছিলেন না শেষ দুই সিরিজে নাসির হোসেন। যেন নিজের ছায়ায় নিজেই হারিয়েছিলেন। তবে দলে টিকে থাকতে হলে এই প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে তার দূতি ছড়াতেই হবে করতে হবে রান।

সাব্বির রহমানকেও দলের হয়ে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে ব্যাট চালাতে হবে। ২০১১ বিশ্বকাপেও ছিলেন দলে। তবে সুযোগ পাননি খেলার। এবার সুযোগের প্রতিদান দিতে হবে তার প্রতি আস্থার।

এছাড়া ব্যাট চালতে সক্ষম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেনও। সুযোগ পেলে তাদেরও ব্যাটিংয়ে অংশগ্রহণ বাড়াতে পারে দলের ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাকেই।

বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে ক্যানবেরায় এই ধারাবাহিকতারই সূচনা করতে পারলে তা আকড়ে, দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ায় কোনো সমস্যাই দেখছেন না ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাই যে আসল তার কতটুকু প্রমাণ করতে পারে টাইগাররা।

** চ্যালেঞ্জটা স্পিনারদেরই

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।