ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিপিএলের ফাইনাল মহারণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
বিপিএলের ফাইনাল মহারণ ছবি: শোয়েব মিথুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গেল ২০ নভেম্বর মিরপুরে জমকালো উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে পর্দা উঠেছিল বিপিএলের তৃতীয় আসরের। ২২ নভেম্বর রংপুর রাইডার্স ও চিটাগং ভাইকিংসের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর একে একে লিগ পর্যায়ের ম্যাচ, কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর রাউন্ডের ম্যাচও শেষ।

এবার অপেক্ষা ফাইনালের। আর সেই ফাইনাল ম্যাচেই মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মুখোমুখি হবে বরিশাল বুলস।

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়।

বিপিএলের এবারের আসরের শুরুটা ভাল হয়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের। ২২ নভেম্বর নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৬ উইকেটে হেরে বসে কুমিল্লা। তবে, প্রথম ম্যাচ হেরে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই চিটাগং ভাইকিংসকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় এবারের আসরের অদম্য এই দলটি। জয়ের শেষ এখানেই নয়। পরের দুই ম্যাচেও টানা জয় পায় বরিশাল ও রংপুরের বিপক্ষে। তবে, নিজেদের জয়ের জোয়ারে আবার ভাটির টান পড়ে পরের ম্যাচে মুশফিকের সিলেটের কাছে ৪ উইকেটে হেরে।

মাশরাফি যে দলের অধিনায়ক সেই দল হারের গ্লানি বয়ে বেড়াবে সেটা কী করে হয়? তাই পরের ম্যাচেই ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১০ রানে হারিয়ে ছন্দে ফেরে কুমিল্লা। এরপর আবার টানা জয়ের পালা। চিটাগং ভাইকিংস ও বরিশাল বুলসকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শ্রেষ্ঠত্বের জানান দেয় বিপিএলে নবাগত এই দলটি। এরপর আবার একটা হোঁচট! ২৬তম ম্যাচে এসে সাকিবের রংপুরের কাছে ২১ রানে হেরে বসে কুমিল্লা।

পরের গল্পটি অবশ্য শুধুই কুমিল্লার বীরত্ব গাঁথা। লিগ পর্যায়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে সিলেটকে ৭১ রানে হারিয়ে ১০ ম্যাচের ৭ টিতে জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষস্থান নিয়ে প্রথম দল হিসেবে উঠে যায় শেষ চারে। শেষ চারেও সেই একই ঝলক অব্যাহত থাকে মাশরাফিদের। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুরকে ৭২ রানে হারিয়ে উঠে যায় স্বপ্নের ফাইনালে।

লিগ পর্যায়ে শেষ চারের এমন ধারাবাহিকতা ফাইনালেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান মাশরাফি বিন মর্তুজা ‘আমরা যে ভাবে খেলতে চেয়েছি সে ভাবে এ পর্যন্ত খেলেছি। এখনতো দু’দলেরই বাঁচা মরার ম্যাচ। আমরা আশাবাদী ও ইতিবাচক। শেষ ম্যাচ গুলো যেভাবে খেলেছি এবং জিতেছি, আশা করছি ওভাবে করতে পারলে ভালো কিছু হবে। ’

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এমনই ইঙ্গিত দেন কুমিল্লার দলপতি।

বিপিএলের আগের দুই আসরের ফাইনালেরও অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। এই নিয়ে এটি তার টানা তৃতীয় ফাইনাল। তাই মনে মনে উদযাপনটা একটু বেশিই। সেই উদযাপনের লেশ এদিন পাওয়া গেল  সংবাদ সম্মেলনেও ‘এটাতো অবশ্যই অনেক আনন্দের। কারণ, বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় আসর এটা। নিজের কাছে ভাল লাগছে যে, অন্তত আরও একটি ফাইনাল খেলার সুযোগ আমার হয়েছে। ইনশাল্লাহ যদি শেষটা ভাল করতে পারি তাহলে আরও ভাল লাগবে। ’

এদিকে কম যায়নি বরিশালও। লিগ পর্যায়ের ১০ ম্যাচের ৭টিতে জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় হয়ে উঠেছে শেষ চারে। লিগ পর্যায়ের পাশাপাশি শেষ চারেও নিজেদের অসাধারণ পারফর্ম দেখিয়েছে বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথেই। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে ফাইনাল।

তাই ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে দলটির ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিসের কন্ঠেও বাজলো আত্মবিশ্বাসের সুর, ‘আমরা লিগপর্ব এবং কোয়ালিফায়ারে ভাল খেলেই ফাইনালে এসেছি। সে খেলাটাই আমরা ধরে রাখতে চাই। ফাইনাল ভেবে নয়, আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলেতে চাই। আশা করি ভাল কিছু হবে। ’

এদিকে ফাইনালের প্রতিপক্ষ হিসেবে কুমিল্লাকে বেশ সমীহের চোখেই দেখছেন নাফিস। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ভাল খেলা এই দলটির বিপক্ষে ফাইনালে খেলা যে সহজ নয়, তা সংবাদ সম্মেলনে আরেক বার মনে করিয়ে দিলেন তিনি, ‘কুমিল্লা সবগুলো ম্যাচেই ভাল খেলেছে। সুতরাং প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভাল খেলতে হবে। কালকের ম্যাচটা দু’দলের জন্যই কঠিন হবে। ’

অন্যদিকে, বিপিএলের ফাইনালের এই হাইভোল্টেজ ম্যাচে ক্রিস গেইলকে দলে পাচ্ছেনা বরিশাল বুলস। বিগব্যাশে মেলবোর্ন রেনেগেটসের হয়ে খেলতে দলটির সাথে চুক্তি অনুযায়ী ৭ দিন আগেই যোগ দেয়ার কথা তাদের অনুশীলন ক্যাম্পে। তাই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে খেলতে পারেননি গেইল। তাকে ছাড়া দল কতটুকু ভাল করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে নাফিস জানান, গেইল দলে  নেই তাতে খুব সমস্যা হবেনা। কারণ, তাকে ছাড়াও আমরা বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতেছি। সবাই মিলে যদি পারফর্ম করি তাহলে ফাইনালেও জিতে পারবো।

এদিকে, পায়ে ব্যথার কারণে এদিন সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারেননি বরিশাল দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তার ইনজুরি কতটুকু ‍প্রবল বা ফাইনালে খেলতে পারবেন কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মালিক রিজওয়ান বিন ফারুক জানান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কিছুটা ইনজুরড। তার ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে। তবে, আশা করছি সে ফাইনাল ম্যাচ খেলতে পারবে।

মাঠের লড়াইয়ে নিজেদের স্বামর্থের সেরাটি প্রমান করেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও বরিশাল বুলস বিপিএলের তৃতীয় আসেরর ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। আর এই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দিন শেষে তারাই জিতবে, যারা মাঠে ভালো পারফর্ম করবে বলে বিশ্বাস করেন শাহরিয়ার নাফিস।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫
এইচএল/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।