ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

হোয়াইটওয়াশের রাতে ক্যাসিনোতে নাসিররা

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
হোয়াইটওয়াশের রাতে ক্যাসিনোতে নাসিররা ছবি: তাসকিন-শফিউল-নাসির (সংগৃহীত)

বাংলাদেশের ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের প্রতি অন্যরকম নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর কোনো দেশে আছে বলে খুব কম শোনা যায়। টাইগার ক্রিকেটাররাও ভক্ত-সমর্থকদের কম দিচ্ছেন না। একটার পর একটা জয় তুলে নিয়ে টাইগারপ্রেমীদের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছেন মুশফিক-সাকিব-তামিম-মাশরাফিরা।

কিন্তু এবার? টেস্টের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ। তাও যেন-তেন ভাবে না।

প্রথম টেস্টে ৩৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ইনিংস ও ২৫৪ রানের পরাজয়। এর আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ড্র করেছিল বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬ উইকেটের ব্যবধানে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে কিম্বার্লিতে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি স্কোরবোর্ডে ২৭৮ রান এনে দিলেও দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছিল ১০ উইকেট হাতে রেখেই। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এবি ডি ভিলিয়ার্সের তাণ্ডবে প্রোটিয়ারা তুলেছিল ৩৫৩ রান। জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২৪৯ রানে, ম্যাচ হারে ১০৪ রানের ব্যবধানে।

সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে তো আরও খারাপ অবস্থা। কারও সেঞ্চুরি ছাড়াই দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৬৯ রানের স্কোর গড়ে। জবাবে, বাংলাদেশ ৪০.৪ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে তোলে মাত্র ১৬৯ রান। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের ২০০ রানের হার। সফরটা যেন শেষ হলেই বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেঁচে যান।

ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সমীহ জাগানো দলটি ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল। টেস্টের কথা না হয় বাদ দেওয়া গেল। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে এমন অসহায় আত্মসমর্পণ তাই স্তম্ভিত করে দিয়েছে পুরো দল ও দেশকে।

তাতে যেন কিছুই যায়-আসে না জাতীয় দলের কিছু ক্রিকেটারদের। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ২০০ রানের হারে বড় লজ্জায় যখন পুরো দেশ, তখন নাসির-তাসকিন-শফিউলের কাছে ক্রিকেটের এই ফল যেন তুচ্ছ!  তৃতীয় ওয়ানডেতে বিশাল ব্যবধানে হারের ঘণ্টা খানেক পরই তারা ক্যাসিনোতে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় রাত ১০টার মধ্যে টিম হোটেলে থাকার নিয়ম থাকলেও তারা সেটি মানেননি। আর পুরো ব্যাপারটিই ঘটেছে দলের ম্যানেজার মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর অগোচরে। পরদিন সকালে এই ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হন নান্নু।

দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের একাধিক প্রতিবেদনে এসেছে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্তও তারা হোটেলে ফেরেননি। এ নিয়ে ম্যানেজার নান্নু সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি ওদের জিজ্ঞেস করে জেনেছি তারা সেখানে ডিনার করতে গিয়েছিল। সেখানে ক্যাসিনো ছিল। তবে তারা ক্যাসিনোতে জুয়া খেলার মতো কিছু করেনি। তারা তো আমাকে বলেছে, ১০টার মধ্যেই টিম হোটেলে ফিরেছে। পরবর্তী টিম মিটিংয়ে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। তাদের তিন জনকেই বিস্তারিত জিজ্ঞেস করা হবে। ’

ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি দলের এমন অবস্থাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিপদ সংকেত হিসেবে দেখছেন। কিন্তু দলের অনেক ক্রিকেটাররা হয়ত এই অবস্থার গুরুত্বই বুঝতে পারছেন না। তাই তো টিম ম্যানেজমেন্টের সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ছুটে গেছেন ক্যাসিনোতে। প্রশ্ন উঠেছে ক্রিকেটাররা কি সত্যিই তাদের ভক্ত-সমর্থকদের মনের অবস্থার খোঁজ রাখেন? রাখলে বিশাল ব্যবধানে হারের পর পরই ক্যাসিনোতে যেতে পারেন না। দর্শকরা যতোই হারের গ্লানির হাহাকারে ডুবুক, তাতে যেন নাসির-তাসকিনদের কিছুই যায়-আসে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ২৪ অক্টোবর ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।