ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

আটচল্লিশে পা রাখলেন গিলক্রিস্ট 

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
আটচল্লিশে পা রাখলেন গিলক্রিস্ট  অ্যাডাম গিলক্রিস্ট

নিজের সময় তো বটে, ক্রিকেট ইতিহাসের যদি সেরা একাদশ নির্বাচন করা হয় তাতেও নাম থাকবে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের। মারকুটে ব্যাটিং হোক বা উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে; গিলি ছিলেন প্রতিপক্ষের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্ক। 

অস্ট্রেলিয়াকে ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ জেতানোর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর একটি বছর ব্যাট হাতে দেখা গেছে গিলক্রিস্টকে। অবশ্য ব্যাটিংয়ে তার যেভাবে রানের ফোয়ারা ছিল তাতে খেলে যেতে পারতেন আরও কয়েক বছর।

কিন্তু অজিরা যেন এমনই। তরুণদের জায়গা করে দেওয়ার জন্য ৪ মার্চ ২০০৮ সালে ভারতের বিপক্ষে খেললেন ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে। খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় জানালেও এখনও তিনি ভক্ত-সমর্থকদের বেঁচে আছেন জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে।  

ভদ্র লোকের খেলা ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনই ছিলেন গিলক্রিস্ট। মাঠে কোনো ক্রিকেটার যখন ফেয়ার-প্লে’র দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তখন উদাহরণ হিসেবে সবার আগে ওঠে আসে গিলির নাম। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান-উইকেটরক্ষকের জন্মদিন। ৪৮-এ পা রেখেছেন গিলক্রিস্ট। ১৯৭১ সালে ১৪ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের বেলিংটনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।  

২৫ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পর টানা ১২ বছর দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন গিলক্রিস্ট। ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলতে নামেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। শুরু থেকেই মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সাদা পোশাকে তার অভিষেক হয় তিন বছর পর। ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষ প্রথম টেস্ট খেলেন গিলি।  

ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে পান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে। ২০০৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ২০ ওভারের ক্রিকেটে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন গিলি।  

গিলির সামনে ছিল ওয়ানডেতে ১০ হাজার রানের অভিজাত ক্লাবে নাম লেখানোর হাতছানি। কিন্তু তা সত্ত্বেও অবসর নেন তিনি। ২৮৭ ওয়ানডেতে (অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ২৭০ ওয়ানডে) ৩৫.৮৯ গড়ে ৯৬১৯ রান করেছেন গিলক্রিস্ট। ১৬ সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে ৫৫ ফিফটি। এছাড়া ৪৭.৬০ গড়ে ৯৬ টেস্টে করেছেন ৫৫৭০ রান। সাদা পোশাকে তার আছে ১৭ সেঞ্চুরি ও ২৬ ফিফটি।  

ফার্স্ট ক্লাস ও লিস্ট-এ ক্রিকেটের উভয় ক্ষেত্রে ১০ হাজারের উপরে রান আছে গিলক্রিস্টের। তবে এসব ছাড়াও গিলি ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও অনবদ্য গ্লাভস হাতে অনবদ্য পারফর্ম্যান্সের জন্য।  

টি-টোয়েন্টি যুগের আগে যে ক’জন ব্যাটসম্যান বোলারদের তুলোধুনো করতে ভালবাসতেন তার মধ্যে গিলি ছিলেন অন্যতম। বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান অবসর নেওয়ার আগ পযর্ন্ত নিজের করে রেখেছিলেন সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের রেকর্ড। অবশ্য ২০১৫ সালে রেকর্ডটি নিজের করে নেন ক্রিকেটের আরেক কিংবদন্তি শ্রীলংকার উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারা।  

তবে এখনো পযর্ন্ত টেস্ট ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ডটি অক্ষত রেখেছেন গিলক্রিস্ট। সাদা পোশাকে চতুর্থতম দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক তিনি। টেস্টে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন গিলি। উইকেটরক্ষক হিসেবে সাঙ্গাকারার পর দ্বিতীয় জন হিসেবে টেস্টে ১৭ এবং ওয়ানডেতে ১৬তম সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। টানা তিন বিশ্বকাপের (১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭) ফাইনালে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করা একমাত্র ক্রিকেটার গিলি।  

২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ফাইনালে তার ১০৪ বলে ১৪৯ রানের ইনিংসটিকে বিবেচনা করা হয় ক্রিকেট বিশ্বকাপের অন্যতম ইনিংস হিসেবে। গিলি তৃতীয়তম ক্রিকেটার যে টানা তিন বিশ্বকাপ জিতেছেন।  

তবে এত সব রেকর্ড গড়া সত্ত্বেও গিলি ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন ২০০৩ বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে সেমিফাইনালে বিখ্যাত ‘ওয়াকিং’ এর জন্য। অরবিন্দ ডি সিলভার বলে শট খেলতে গিয়ে সাঙ্গাকারার হাতে বন্দী হোন তিনি। কিন্তু আবেদন সত্ত্বেও আম্পায়ার আউট না দিলে ‘হাঁটা’ শুরু করেন গিলি। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও তেমন কাণ্ড করেছিলেন তিনি। আম্পায়ারের আগেই গিলি বুঝে গিয়েছিলেন আউট হওয়াটা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
ইউবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।