ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৪৫ দিন পর কবর থেকে তোলা হলো গৃহবধূর মরদেহ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৪
৪৫ দিন পর কবর থেকে তোলা হলো গৃহবধূর মরদেহ  প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম: নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় দাফনের ৪৫ দিন পর কবর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য আলফা শাহরিন (২৬) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে চালিতাতলী বাজারের মসজিদ সংলগ্ন নুরুল আমিনের পারিবারিক কবরস্থান থেকে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

আলফা শাহরিন, একই থানার চালিতাতলী বাজারের দারোগা বাড়ির মো. জাহেদুল মোস্তফার স্ত্রী ও একই এলাকার নুরুল করিমের মেয়ে। এর আগে গত গত ২৮ এপ্রিল ভোরে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলফা শাহরিনের মৃত্যু হয়।
 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহেদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, যৌতুকের টাকা না পেয়ে শাশুড়ি, ননদ ও দেবর মিলে আলফা শাহরিনকে হত্যার অভিযোগে মামলার করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (আজ) সকালে দাফনের ৪৫ দিন পর কবর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য আলফা শাহরিনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পুনরায় বিকেলে মরদেহটি দাফন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ মে যৌতুকের টাকা না পেয়ে শাশুড়ি, ননদ ও দেবর মিলে শাহরিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ মামলার আবেদন করা হয়। মামলায় আলফা শাহরিনের শাশুড়ি বিবি আয়েশা (৪৮), তার মেয়ে আশফিকা (১৯) ও ছেলে সামিরকে (২১) আসামি করা হয়। মামলাটি গ্রহণ করে নগরের পাচঁলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সরাসরি এজাহার হিসেবে করার গ্রহণ করার নির্দেশ ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে মামলা তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। গত ৭ মে পাঁচলাইশ থানায় মামলা হিসেবে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা হয়।  

২০২১ সালের ১৭ জুন নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী বাজারের দারোগা বাড়ির মৃত সিরাজুল মোস্তফার ছেলে মো. জাহেদুল মোস্তফার সঙ্গে বিয়ে হয় আলফা শাহরিনের। এই দম্পত্তিহর ২ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে শাহরিনকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের একপর্যায়ে সুখের আশায় মা এবং আত্মীয়-স্বজন থেকে আনা ৯ লাখ ২১ হাজার টাকা স্বামী এবং শাশুড়িকে এনে দেন শাহরিন। গত ৯ এপ্রিল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছে শাহরিনের স্বামী মো. জাহেদুল মোস্তফা। রিকশার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে শাহরিনের ফাঁস লেগেছে বলে গত ২৭ এপ্রিল নুরুল করিমকে হোয়াটসঅ্যাপে কল করেন বিবি আয়েশা (শাশুড়ি)। শাহরিন বেডরুমে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে নগরের চান্দগাঁও থানার বেসরকারি ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড ডেন্টাল হাসপাতালে নিয়ে যান নুরুল করিম। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে শাহরিনকে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। সেখানে আইসিইউর সিট খালি না থাকায় শাহরিনকে নিয়ে যাওয়া হয় নগরের বেসরকারি চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল  শাহরিনের মৃত্যু হয়। মরদেহের গোসল দেওয়ার সময় প্রতিবেশী ইয়াসমিন আক্তার শাহরিনের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন দেখলে বাবা নুরুল করিমকে জানান। একইদিন বাবা নুরুল করিমের পারিবারিক কবরস্থানে শাহরিনকে দাফন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।