চট্টগ্রাম: তিনশ কোটি টাকার যন্ত্রপাতির অভাবে চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শনিবার (২৪ মে) সিটি করপোরেশনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে 'চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা' শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন কাজে যন্ত্রপাতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সরকারের সদিচ্ছার অভাবে নতুন যন্ত্রপাতি কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনশ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয়ে বাজেট বরাদ্দ না পাওয়ায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন হতাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অথচ চট্টগ্রাম থেকে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সবকিছু নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রামকে দেওয়ার বেলায় বৈষম্য করা হয়।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতা নিরসন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডা. শাহাদাত হোসেন ।
জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রতিবন্ধকতাগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, কোনো কিছু লুকানোর প্রয়োজন নেই। মেয়রকে খুশি করার জন্য তথ্য গোপন করলে সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। তাই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকৃত সমস্যা তুলে ধরুন। গণমাধ্যমের রির্পোট দেখে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার ব্যুরো প্রধান ভূঁইয়া নজরুল।
বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অভীক ওসমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের উপাচার্য প্রফেসর এস. এম. নছরুল কদির, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এএসএম বজলুল হক, পেশাজীবী নেতা ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, ডা. একেএম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব ও সিডিএ বোর্ড মেম্বার জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাসসের ব্যুরো চিফ মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম, সিডিএ বোর্ড মেম্বার স্থপতি ফারুক আহমেদ, স্থপতি জেরিনা হোসেন, স্থপতি আশিক ইমরান, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. শহীদুল হক এবং অধ্যক্ষ সুরাইয়া বেগম। স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী।
এএসএম বজলুল হক চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যকর করার লক্ষ্যে প্রচারণা ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি, নাগরিক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধির সমন্বয়ে সিটি করপোরেশনে একটি সেল বা কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে বিভিন্ন পার্ক; যেমন বাটারফ্লাই পার্ক ইত্যাদি করা যেতে পারে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক করতে হবে। আবর্জনাকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। ক্লাব কালচার সৃষ্টির মাধ্যমে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে।
এআর/টিসি