চট্টগ্রাম: মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয়লাভ বাংলাদেশিদের শ্রেষ্ঠ অর্জন বিধায় মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জাকির হোসেন সড়কের বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণকালে মেয়র এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কখনো বিতর্কিত হতে পারে না। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছেন, যা আমাদের গর্বের ইতিহাস।
পঁচিশে মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। ১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চের গণহত্যা শুধু বাংলাদেশেরই নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে গণহত্যা চালানো হয়। বিশেষ করে ঢাকায় তারা নির্বিচারে নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করে। জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযান ছিল এক নির্মম হত্যাযজ্ঞ। তবে চট্টগ্রাম ছিল ব্যতিক্রম। সারাদেশে পাকিস্তানি বাহিনী নির্বিচারে হামলা চালালেও চট্টগ্রামে তারা সফলভাবে অভিযান পরিচালনা করতে পারেনি। এর মূল কারণ ছিল চট্টগ্রাম থেকে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ। চট্টগ্রামে অবস্থানরত স্বাধীনতার স্বপক্ষের সেনারা পূর্ব থেকেই সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনী চট্টগ্রামে সহজে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা পরিকল্পিত প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং পাকিস্তানি বাহিনীকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে।
৭১ ও ২৪ নিয়ে মেয়র বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার কোনো সহজ অর্জন ছিল না। ১৯৭১ সালে একটি নতুন দেশের জন্ম হয়েছিল মুক্তিকামী জনগণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। আর ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি স্বৈরাচারী সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন। তবে এই দুটি ঘটনার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, যা কখনোই বিতর্কিত হওয়ার সুযোগ নেই। ১৯৭১ সালে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি একটা নতুন দেশের অভ্যুদয় হয়েছে। আর ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি সরকার পরিবর্তন হয়েছে। যে সরকার ছিল ফ্যাসিস্ট এবং জন-বিরোধী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
এআর/টিসি