ঢাকা, সোমবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খুলশী থানায় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৫৭, অক্টোবর ১২, ২০২৫
খুলশী থানায় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ

চট্টগ্রাম: নগরের খুলশী থানায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যমুনা টিভির স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত ও ক্যামেরাপারসন আসাদুজ্জামান লিমন এর ওপর হামলার নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।  

রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে নগরের খুলশী থানায় সংবাদ সংগ্রহের সময় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম থানার একটি কক্ষে সাংবাদিক জোবায়েদকে আটকে রেখে নির্মমভাবে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করা হয়।

হামলায় তার চোখ, মুখ ও কানে গুরুতর আঘাত লাগে।  

এ ঘটনায় সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণ ঘৃণ্য, নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য।

এটি সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সার্বজনিন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। বিবৃতিতে অবিলম্বে হামলাকারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার ও ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান লিমন ও জোবায়েদ ইবনে শাহাদাতের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

সিইউজে নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনের মূলে থাকে পুলিশ। সেই পুলিশেরই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের সাংবাদিকদের উপর হামলে পড়ার ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। এই ঘটনায় যদি দৃষ্টান্তমূলকভাবে বিচার না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ আরও সংকুচিত হবে। সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা বলতে আর কিছুই থাকবে না। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবিলম্বে এই ঘটনার বিচার হতে হবে। অন্যথায় সিইউজেসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সাংবাদিক সমাজ কঠোর কর্মসূচি পালন করবে।  

এদিকে দুই সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে খুলশী থানার সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশ করে সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।

সমাবেশে অবিলম্বে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে আইনি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক, দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো প্রধান শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার ও চট্টগ্রাম টিভি রিপোর্টাস নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক হোসাইন জিয়াদ।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক লতিফা আনসারি রুনা, সিইউজের টিভি ইউনিটের প্রধান তৌহিদুল আলম, চট্টগ্রাম টিভি রিপোর্টাস নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব একে আজাদ, চট্টগ্রাম টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আশরাফুল আলম মামুন, যমুনা টিভির ব্যুরো প্রধান জামশেদ রেহমান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ব্যুরো প্রধান আলমগীর সবুজ, স্টার টিভির ব্যুরো প্রধান এমদাদুল হক ও জাগো নিউজের ব্যুরো প্রধান ইকবাল হোসেন।  

সিটিআরএন-এর নিন্দা

যমুনা টিভির সাংবাদিক জোবায়েদ ইবনে শাহাদাতের উপর অশালীন আচরণ ও মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে চট্টগ্রাম টেলিভিশন রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক (সিটিআরএন)।

বিবৃতিদাতারা হলেন সিটিআরএন আহবায়ক হোসাইন জিয়াদ, যুগ্ম আহ্বায়ক একে আজাদ, নির্বাহী সদস্য আরিচ আহমদ শাহ, ফখরুল ইসলাম, সৈয়দ তাম্মিম মাহমুদ, ফেরদৌস লিপি, শহিদুল সুমন।

সংগঠনের নেতারা বিবৃতিতে বলেন, দায়িত্ব পালনরত একজন সাংবাদিকের সঙ্গে পুলিশের এমন আচরণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক নিরাপত্তার প্রতি চরম হুমকি। সাংবাদিকরা সমাজের চোখ ও কান—তাদের ওপর এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাংবাদিক জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। অথচ তাকে থানার ভেতরে নিয়ে গিয়ে অপমান ও মারধর করা হয়েছে। যা পেশাগত মর্যাদার চরম অবমাননা। এ ঘটনায় আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।